ঋণখেলাপের বিষয়টিকে একটি ঠুনকো অজুহাত বলে দাবি করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘সরকার যদি ইচ্ছা করে আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখবে, তাহলে নির্বাচন করব না। আমরা তো নির্বাচনে ছিলাম না। টাঙ্গাইল-৮ আসন যদি শূন্য না হতো আমরা নির্বাচনে অংশ নিতাম না। সেখান থেকে আমার দল জন্ম হয়েছে। তাই আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এটা যদি টাঙ্গাইল-৬ হতো তাহলে অংশ নিতাম না।’
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের প্রার্থিতা ফিরে পেতে করা আপিলের শুনানি শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এটা কি ব্যাংকের গাফিলতি না সরকার আপনাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায় এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আসলে আমি ব্যাংকের গাফিলতি বলি নাই। আমি বলেছি যে, রিটার্নিং অফিসার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিপোর্ট নিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে কোনো রিপোর্ট নেয়নি। আসলে উটের পিঠে চলেছে দেশ।’
শুনানির রায় পরে দেয়ার বিষয়টির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এর আগে দেখেছি শুনানি শেষে রায় জানিয়ে দেয়া হয়। এই প্রথম দেখলাম বিকালে রায় দেয়া হবে।’
এসময় তিনি বলেন, ‘ডাল ম্যা কুছ কালা হ্যায়।’
ন্যায়বিচারের আশা কতটুকু জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করে চলি না, কর্ম করে চলি। আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি।’
এটা কোনো ষড়যন্ত্র কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। এটা রিটার্নিং কর্মকর্তার অদক্ষতাও হতে পারে। কারণ আমাদের দেশে যোগ্য লোক যোগ্যস্থানে নেই।
ন্যায়বিচার না পেলে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে তিনি জানান।
এর আগে সকাল নয়টা ৫৭ মিনিটে নির্বাচন কমিশন(ইসি) কার্যালয়ে পৌঁছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। সাড়ে ১০টার দিকে শুনানি শেষ হয়। তবে রায় পরে দেয়া হবে বলে ইসি জানায়।
শুনানিতে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীরপ্রতিক, যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, সদস্য অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, সদস্য অ্যাড. আতিকুর রহমান।
শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিনসহ সকল কমিশনার আইন শাখার সকল কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বুধবার টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ মো. খুরশিদ আনোয়ার যাচাইবাছাই করে ঋণখেলাপের দায়ে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। একই দিন আরো দুজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটায় কাদের সিদ্দিকী প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করেন। রাতে আবেদনপত্র যাচাইবাছাই শেষে ২ মার্চ রোববার শুনানির দিন ধার্য করে নির্বাচন কমিশন। পরে সাড়ে রাত ৯টার দিকে শুনানিতে উপস্থিত থাকতে নির্বাচন কমিশন থেকে কাদের সিদ্দিকী বরাবর একটি চিঠি প্রস্তুত করা হয়। ওই রাতেই কাদের সিদ্দিকীর একজন প্রতিনিধি নির্বাচন কমিশন থেকেই তা সংগ্রহ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে মোহাম্মদপুরে কাদের সিদ্দিকীর বাসায় দলের বর্ধিত সভায় উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে তিনি ২৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।