DMCA.com Protection Status
title="৭

‘বাংলাদেশকে আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেবে ভারত’

111111111_43760প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন।'বাংলাদেশকে আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেবে ভারত' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। ছবি: বাসস প্রায় আধঘণ্টার এ বৈঠকে তারা ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সন্ত্রাসকে অভিন্ন শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এসব মোকাবেলায় দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এতে মনমোহন সিং আশ্বাস দিয়েছেন ভারত বাংলাদেশকে আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেবে। ত্রিপুরা থেকে এই বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। বৈঠকে শেখ হাসিনা তিস্তাচুক্তি অবিলম্বে সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। জবাবে মনমোহন সিং বলেন, "এ সময়ে এই চুক্তি করা কঠিন। তবে তারা এ ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।" শেখ হাসিনা সীমান্ত চুক্তির বিষয় উত্থাপন করলে মনমোহন বলেন, এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সংবিধান সংশোধন বিলটি রাজ্যসভায় উত্থাপিত হয়েছে। তবে ভারতের পার্লামেন্টের অধিবেশন শেষ হয়ে যাওয়ায় এ নিয়ে পরবর্তী লোকসভা গঠন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দুই নেতা কানেকটিভিটি নিয়েও আলোচনা করেছেন। ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ গড়ে তোলার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশকে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন মনমোহন সিং। নেপিদোয় মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৈঠকে মনমোহন সিং তৃতীয় দফায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। তিনি দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও গ্রামীণ জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে শেখ হাসিনা সরকারের অবদানের প্রশংসা করেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল। তিনি বলেন, অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে দুই সরকারপ্রধান কথা বলেছেন। তাদের আলোচনায় দুই দেশের পারস্পরিক বিষয় ছাড়াও আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন প্রসঙ্গ স্থান পায়। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অভিন্ন শত্রু ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সন্ত্রাস। আমরা এই অভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম চালিয়ে যেতে অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশ এই অঞ্চলকে একটি সন্ত্রাসমুক্ত অঞ্চল হিসেবে দেখতে চায়। সে লক্ষ্যে একযোগে কাজ করতে চায়। বৈঠকে শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ খাতে ভারতের অব্যাহত সহযোগিতার কথা স্মরণ করে সামনের দিনগুলোতে তা আরও বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানিয়েছেন। বিশেষ করে ভারতের ত্রিপুরা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশের সঞ্চালন লাইনে যুক্ত করার ব্যাপারে মনমোহন সিংয়ের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ জানান। জবাবে মনমোহন সিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, সম্ভাব্য দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের আঞ্চলিক উদ্যোগে যৌথভাবে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও গতিশীল করবে। মনমোহন সিং ও শেখ হাসিনার মধ্যে বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তিস্তা পানি চুক্তি অবিলম্বে স্বাক্ষরের জন্য চাপ দেন। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই সময়ে এই চুক্তি করা কঠিন। তবে তিস্তা থেকে যেটুকু পানি প্রবাহিত হওয়ার কথা তা বাংলাদেশে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন তিনি দেশে সর্বসম্মতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। প্রকারান্তরে তিনি লোকসভা ভোটের পরে পরবর্তী সরকারের জন্যই অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে মনমোহন সিং বলেন, এই চুক্তি রূপায়ণের জন্য ভারতীয় সংবিধান সংশোধন করার বিলটি রাজ্যসভায় উত্থাপিত হয়েছে। এতে ভারত সরকারের দায়বদ্ধতা প্রমাণিত। তবে ভারতের পার্লামেন্টের অধিবেশন সমাপ্ত হয়ে গেছে। ফলে এখন পরবর্তী লোকসভা গঠনের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া পথ নেই।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!