আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের একটি গূরুত্বপূর্ন দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) তৎকালীন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ট আসন লাভকারী আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক উত্তাল জনসমুদ্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম' বঙ্গবন্ধুর এই তেজোদীপ্ত ঘোষণাই ছিলো আমাদের স্বাধীনতার ভিত্তি। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের শত নিপীড়ন উপেক্ষা করে বীর বাঙালি অস্ত্র ধারণের পূর্বে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে এদিনই স্বাধীনতার ডাক দেয়া হয়েছিলো। সেদিন উত্তাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলার মুক্তিকামী জনতার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু- আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলারও আহ্বান জানিয়ে ভাষণে বঙ্গবন্ধু আরো বলেন, রক্ত যখন দিয়েছি, আরো রক্ত দেবো। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক রেসকোর্সে এ ভাষণ যখন দিচ্ছিলেন ঠিক ওইদিনই ঢাকায় এসে পৌঁছান জেনারেল টিক্কা খান ও রাও ফরমান আলী। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর আলোচনার অন্তরালে সামরিক প্রস্তুতির এক পর্যায়ই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ভাষণ এ দেশের জনগণকে দারুণভাবে আন্দোলিত করে।পরবর্তিতে পাকিস্থান সেনাবাহিনী সহ অন্যান্য বাহিনীতে কর্মরত বাঙ্গালী সদস্যগন বিদ্রোহের সূচনা করেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। 'বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো' স্লোগানে স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ জাতি সেদিন এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো।