দীর্ঘ দুদিন পর নিখোঁজ মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানটির খোঁজ মিলেছে। রবিবার একটি অনুসন্ধানকারী দল দাবি করেছে, তারা ভিয়েতনামের থো চু দ্বীপের কাছে বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ পেয়েছে। তাদের ধারণা, এগুলো নিখোঁজ বোয়িং ৭৭৭ বিমানটিরই ধ্বংসাবশেষ। এর আগে অনুসন্ধান কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, তাদের আশঙ্কা বিমানটি ৩৫ হাজার ফুট উচ্চতায় ওঠার পর বিস্ফোরিত হয়ে টুকরো টুকরো ধ্বংসাবশেষ সাগরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার এই খবরে তাদের সেই ধারণা আরও দৃঢ় হলো। শুক্রবার গভীর রাত থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর মালয়েশীয় বিমানটি নিয়ে দিনভর নানান বক্তব্য প্রচারে এমন দ্বিধা-দ্বন্দের সৃষ্টি হয়। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বোয়িং ৭৭৭-২০০ বিমানটির খোঁজে তল্লাশি চলছিল। গতকাল সন্ধ্যায় ন্যাশনাল কমিটি ফর সার্চ অ্যান্ড রেসকিউয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, থো চু দ্বীপ থেকে ৫০ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে তারা বোয়িং বিমানটির দুটি ভগ্নাংশ পাওয়া গেছে বলে জানতে পেরেছেন। তবে রাতে বিশদ তল্লাশি চালানো সম্ভব হয়নি। তারা আশা করছেন, আজ সোমবার দিনের বেলা ভালোভাবে খোঁজ করতে পারবেন। বোয়িং বিমানটি গত শুক্রবার গভীর রাতে ২৩৯ জন যাত্রীসহ নিখোঁজ হয়। বিমানটির খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। ২২টি বিমান ও ৪০টি জাহাজ অনুসন্ধানের কাজে নিয়োজিত রয়েছে বলে মালয়েশিয়ার সেনাপ্রধান জানিয়েছেন। এদিকে গতকাল বিমানটি হারিয়ে যাওয়ার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা আগে রাডার স্ক্রিন থেকে বিমানটি হারিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তের তথ্যাদি পর্যবেক্ষণ করে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে কর্মকর্তারা আরও আশঙ্কা করছেন, ওই বিমানটিতে অন্তত দুজন এমন ব্যক্তি ছিল, যারা ভুয়া কাগজপত্র ও নথি ব্যবহার করে বিমানটির আরোহী হন। ওই দুই যাত্রী চোরাই পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার বিমান বাহিনীর প্রধান দাবি করেছেন, ওই ফ্লাইটে যাওয়ার জন্য পাঁচজন যাত্রী টিকিট কাটলেও শেষ পর্যন্ত তারা বিমানে উঠেননি। তাদের লাগেজও সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানে ১৪টি দেশের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে চীনের ১৫২ জন, মালয়েশিয়ার ৩৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১২ জন, অস্ট্রেলিয়ার সাতজন, ভারতের পাঁচজন, যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন, ফ্রান্সের তিনজন, নিউজিল্যান্ডের দুজন, ইউক্রেনের দুজন, কানাডার দুজন এবং ইতালি, তাইওয়ান, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রিয়ার একজন করে নাগরিক ছিলেন।