বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ৬৬টি ক্যাম্পের তালিকা হস্তান্তর করেছে দেশটির সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। একই সঙ্গে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ভারতের ইংরেজি পত্রিকা ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের কাছে এ ধরনের কোনো তালিকা হস্তান্তরের তথ্য নেই বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনদিনব্যাপী দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিদর্শক (আইজি) পর্যায়ের দ্বি-বার্ষিক বৈঠকে ঐ তালিকা হস্তান্তর করা হয়েছে। গত ৬ মার্চ থেকে বিএসএফের মেঘালয় সীমান্তের সদরদপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তালিকা হস্তান্তরের বিষয়ে বিএসএফের আসাম সীমান্তের আইজি সুধির কুমার শ্রীবাস্তব সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে ৬৬টি ক্যাম্পের তালিকা হস্তান্তর করে সেগুলো গুড়িয়ে দেয়া জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তালিকায় আসামের উলফা এবং এনডিএফবি, মনিপুরের পিএলএ ও কেওয়াইকেএল, নাগাল্যান্ডের এনএসসিএন, ত্রিপুরার এনএলএফটি ও মেঘালয়ের এইচএনএলসি এবং এএনভিসি-বি এর ক্যাম্প রয়েছে বলে জানানো হয়। তিনি বলেন, তিনদিনের বৈঠকে বাংলাদেশের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাবিবুল করিম। তিনি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে থাকা এসব ক্যাম্প গুড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে শ্রীবাস্তব জানান। বৈঠকে মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরামসহ পাঁচটি সীমান্তের আইজি ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত রক্ষী পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এবারের বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা ও তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) কামাল উদ্দিন আহমেদ এ ব্যাপারে বলেন, গতকাল রবিবার পর্যন্ত সরকারের কাছে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য আসেনি। তাই এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।
ইকোনমিক টাইমসের ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, খুবই আন্তরিক পরিবেশে আইজি পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, চোরাচালান রোধ, জাল মুদ্রা ও সীমান্ত অপরাধ বন্ধ করাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০০৪ সালেও বিএসএফ ১৯৫টি ক্যাম্পের তালিকা প্রদান করেছিলো। যদিও তত্কালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এ ধরনের ক্যাম্প থাকার কথা অস্বীকার করে। উল্লেখ্য, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম এবং আসামের সঙ্গে বাংলাদেশে ১৮৮০ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে।