নিজের প্রভাব খাটিয়ে বিনা পাসপোর্টেই চারজন ব্যক্তিকে ভারতে নিয়ে যেতে চাইলে বাধার সম্মুখীন হন বাংলাদেশের সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী। মন্ত্রীর প্রভাবে সে দেশের কাস্টমস বিভাগ এই চার ব্যক্তিকে ছেড়ে দিলেও ডাল গলেনি ভারতে। কাস্টমস বিভাগের কড়া মনোভাবে মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা চার ব্যক্তিকে ফিরে যেতে হয় বাংলাদেশে। এ ঘটনাটি ঘটে রোববার করিমগঞ্জের টাউন কালীবাড়ী রোডের ইমিগ্রেশন সেন্টারে। এই খবর দিয়েছে আসামের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক যুগশঙ। প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আমন্ত্রণে এক সেমিনারে অংশ নিতে ওই দিন করিমগঞ্জে যান বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামী লীগের মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী। সঙ্গে ছিলেন জকিগঞ্জের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদসহ আরো ছয়জন। যার মধ্যে মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ দুইজন ব্যক্তিগত সচিব ছাড়া আর কারোরই ভারতে প্রবেশ করার বৈধ অনুমতি ছিল না। তবুও মন্ত্রী বাড়তি চারজন লোককে সঙ্গে নিয়ে যান। এমনকি নিজের প্রভাব খাটিয়ে জকিগঞ্জ বর্ডার দিয়ে কুশিয়ারা নদী পার হয়ে করিমগঞ্জে পাড়ি জমান। তবে বাধার সম্মুখীন হন ইমিগ্রেশন সেন্টারে। প্রয়োজনীয় নথিপত্র ঘাঁটতে গিয়ে দেখা যায় মন্ত্রী, সংসদ সদসদের সঙ্গে থাকা বাকি সদস্যের মধ্যে চারজনের সঙ্গে পাসপোর্ট নেই। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে করিমগঞ্জের ইমিগ্রেশন বিভাগ।
যুগশঙ্খ জানায়, করিমগঞ্জের ইমিগ্রেশন কার্যালয় থেকে প্রশ্ন তোলা হয় বিনা পাসপোর্টে ওই চার ব্যক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে কীভাবে করিমগঞ্জে এলেন? তাদের বিনা পাসপোর্টে এ দেশে থাকতে দেয়া যাবে না। তখন বাংলাদেশের মন্ত্রী যুক্তি দেখান, আগে একবার তিনি ত্রিপুরা গিয়েছিলেন। তখন তিনি বিনা পাসপোর্টে একুশ জন সদস্য নিয়ে সে রাজ্যে প্রবেশ করেছিলেন, এবার মাত্র চারজন। তাই তিনি আগের অভিজ্ঞতায় বিনা পাসপোর্টে এই অতিরিক্ত চারজনকে নিয়ে এসেছেন।
তবে মন্ত্রীর এ যুক্তিতে ডাল গলেনি। কড়া মনোভাব গ্রহণ করে ইমিগ্রেশন বিভাগ। পরে বাধ্য হয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে অবৈধভাবে ভারতে আসা ওই চারজনকে ফিরে যেতে হয় বাংলাদেশে। করিমগঞ্জ সরকারি আবর্ত ভবনে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিষয়টি স্বীকার করেন মন্ত্রী মহসিন আলী বলেন, ইমিগ্রেশন বিভাগ এত কড়া মনোভাব দেখিয়েছে যে, তার সঙ্গে থাকা লাল পাসপোর্ট দেখেও কোনো বাড়তি সুবিধা দেয়নি।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু নির্যাতনসহ অন্য সমস্যা নিয়ে সাংবাদিকরা তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এসব আগে ঘটেছিল, তবে শেখ হাসিনা সরকার ব্যাপারটি নিয়ে কড়া মনোভাব নিচ্ছেন। ফলে আগের তুলনায় হিন্দু নির্যাতনসহ দেব- দেবীদের মন্দির ভাংচুরের ঘটনা অনেকাংশে কমে গেছে। এছাড়া এখন যেসব ঘটনা ঘটছে তাতে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে। তবে এই সমস্যাগুলো অচিরেই সমাধান হয়ে যাবে। পাশাপাশি শেখ হাসিনার কার্যকালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো মধুর হবে বলে মত দেন তিনি।