
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেভারভ বলেছেন, ক্রিমিয়ায় রোববার অনুষ্ঠেয় গণভোটের ফলাফলের প্রতি মস্কো সম্মান জানাবে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি বলেছেন, ওয়াশিংটন এ গণভোটকে স্বীকৃতি দেবে না।
শুক্রবার লন্ডনে দীর্ঘ ছয় ঘণ্টার আলোচনা শেষে এক সাংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন দু দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেরনে লেভারভ বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনে (ক্রিমিয়ায়) আগ্রাসন চালানোর কোনো ইচ্ছে রাশিয়ার নেই। তারা শুধু ক্রিমিয়ার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখাতে চায়। ইউক্রেনের এ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে তারা কিয়েভের সঙ্গে থাকতে চায় নাকি রাশিয়ায় যোগ দিতে চায়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, লেভারভ তাকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, ক্রিমিয়ার গণভোটের ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন সম্পর্কে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন না।
এর জবাবে জন কেরি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেভারভকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন খুঁজে বের করতে না পারলে তাদেরকে কঠিন মূল্য দিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও ক্রিমিয়ার গণভোটকে আন্তর্জাতিক আইন এবং ইউক্রেন সংবিধানের পরিপন্থী বলে মনে করছে। তারা ‘ক্রিমিয়া সঙ্কটের’ সুরাহা না হলে মিস্কোর বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপেরও হুমকি দিয়েছে।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এমাগত লঙ্ঘিত হতে থাকলে তাদের(রাশিয়া) কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে শুক্রবার পাশ্চাত্যপন্থী ও রুশপন্থী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা গোলাগুলির শব্দ শোনার খবর দিয়েছেন এবং অসমর্থিত খবরে হতাহতেরও খবর পাওয়া গেছে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর দোনেতস্কে রুশপন্থী বিক্ষোভকারীদের সাথে সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত একজন নিহত ও বহু হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় শহরটির লেনিন স্কয়ারে।এক ব্যক্তি নিহত হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচের পতনের পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে। রুশ সেনারা ইতিমধ্যে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপটি দখল করে নিয়েছে। এর আগে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ক্রিমিয়া ছিল রাশিয়ারই অংশ। এখনো সেখানে রয়েছে রুশ নৌবহর ব্ল্যাক সি ফ্লিটের ঘাঁটি।