DMCA.com Protection Status
title="৭

নিখোঁজ মালয়েশীয় বিমানঃ সন্দেহের তীর এখন দুই পাইলটের দিকে

image_82016_0মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৩৭০ বিমানটির রহস্যময় নিখোঁজের পেছনে এর দুই পাইলটের হাত আছে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা। এ বিষয়ে তদন্তে যোগ দেয়া মার্কিন গোয়েন্দারাও একই ধারণা পোষণ করছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়াকে। এরইমধ্যে শনিবার ওই দুই পাইলটের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে মালয়েশিয়ান পুলিশ।

উড্ডয়নের এক ঘণ্টা পর ইচ্ছে করে বিমানটির গতিপথ ঘোরানো হয়েছে বলে শনিবার মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক নিশ্চিত করেন। আর এই কাজ বিমানটির ভেতরে থাকা কেউ করেছে বলেও মালয়েশীয় পুলিশের সন্দেহের কথা জানান তিনি। তার কথার সূত্র ধরেই প্রথমে তদন্তের আওতায় আনা হয় বিমানের দায়িত্বে থাকা প্রধান পাইলট ক্যাপ্টেন জাহারি আহমেদ শাহ ও তার সহযোগী কো-পাইলট ফারিখ আব্দুল হামিদকে। এছাড়া বিমানটিতে থাকা যাত্রী ও ক্রুদেরও সন্দেহের আওতার বাইরে রাখা হচ্ছে না।

মালয়েশিয়ান বিভিন্ন মিডিয়া জানায়, শনিবার দেশটির পুলিশ ক্যাপ্টেন জাহিরি আহমেদ শাহর বাড়িতে ব্যপক তল্লাশি চালায়। তারা সেখানে কমপক্ষে দুঘণ্টা জাহিরির ব্যবহৃত কম্পিউটারসহ বিভিন্ন জিনিস খতিয়ে দেখেন। সেখানেই গোয়েন্দারা দেখতে পান ৫৩ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন জাহারি তার বাড়িতে আগেই নিজ ফ্লাইটের একটি কাল্পনিক চিত্রসহ প্রতিরূপ একত্র ছিলেন। যদিও এটাই যে তাকে অপরাধী প্রমাণ করছে না তা অবশ্য এখনো স্বীকার করছে পুলিশ।

বিমানটির কো-পাইলট ২৭ বছর বয়সী ফারিখ আব্দুল হামিদের বিষয়েও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। এছাড়া বিমানের অন্যান্য ক্রুদের জীবন বৃত্তান্ত ও গত কয়েক মাসের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের ছাকনি থেকে বাদ পড়ছে না প্রথম থেকে সন্দেহের তালিকায় থাকা ভূয়া পাসপোর্টধারী দুই ইরানি যাত্রীও।

গোয়েন্দারা বলছেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ককপিটে প্রবেশ,নির্গমন ও এর নিরাপত্তার ব্যপারে কড়াকড়ি নিয়ম মেনে চলে। এরমধ্যে ককপিটের দরজা থাকে বুলেটপ্রতিরোধী। যা অবশ্যই ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়ে থাকে। 

এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরের তিমাসেক পলিটেকনিকের উড্ডয়ন বিশেষজ্ঞ পল ইয়াপ বলেন, ‘প্রথম মানুষ যারা ইচ্ছাকৃত ভুলের সঙ্গে জড়িত, তারা হলো ককপিটে থাকা পাইলটগণ। তাদের একজন বা তারা উভয়েই এর পেছনে জড়িত।’

এদিকে নিখোঁজ বিমানটির সন্ধানে অনুসন্ধান অব্যাহত আছে। নতুন করে ভারত মহাসাগরে চলছে ব্যাপক তল্লাশি। বাংলাদেশ নৌবাহিনীও বঙ্গোপসাগরে তার সমুদ্রসীমায় বিমানটি অনুসন্ধান করছে।

অন্যদিকে বিমানটিকে ছিনতাই করে পাকিস্তানের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে পশ্চিমা মিডিয়ায় যে গুজব রটানো হয়েছিল তা শনিবার সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে দেশটির বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার মধ্যরাতে মোট ২৩৯ জন ক্রু ও যাত্রী নিয়ে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এমএইচ ৩৭০ বিমানটি রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়।

উড্ডয়নের এক ঘণ্টা পর মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূল ধরে উড়ে যেতে যেতে দক্ষিণ চীন সাগর এলাকায় বিমানটির সঙ্গে শেষ যোগাযোগ হয়। এরপর সেটি বেমালুম হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। যদিও স্যাটেলাইট সিগন্যাল আরো সাত ঘণ্টা বিমানটিকে নজরে রাখে কিন্তু এরপরই সেটি উধাও হয়ে যায়।

রাডারে ধরা পড়া বিমানটির সর্বশেষ তরঙ্গ যাচাই করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সেটি থাই উপসাগরের সর্বশেষ অবস্থান থেকে প্রায় সমকোণে বামে ঘুরে বঙ্গোপসাগরের ভারতীয় অঞ্চলভুক্ত দ্বীপপুঞ্জ আন্দামানের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!