DMCA.com Protection Status
title="৭

বিদ্রোহীতেই ডুবলেন হাসিনা-আশরাফ!

image_81995_0 বহু চেষ্টা করেও বিদ্রোহী ঠেকানো যায়নি। তাই খোদ শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আসনে দল সমর্থিত প্রার্থী হেরেছে। এতোকিছুর পরেও নির্দেশ মানলেন না নিজ এলাকার দলীয় নেতাকর্মীরাই। এতো কৌশল ও চেষ্টার পরেও তাদের মুখ রাখলেন না তারা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদীয় আসন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী গাজী গোলাম মোস্তাফা বিজয়ী হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী সোলায়মান বিশ্বাসকে হারিয়েছেন। গাজী গোলাম মোস্তফা পেয়েছেন ৩১ হাজার ৯৬৫ ভোট। আর সোলায়মান বিশ্বাস পেয়েছেন ১১ হাজার ৯২৩ ভোট।

অপরদিকে কিশোরগঞ্জ সদরে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। এখানে সৈয়দ আশরাফের নির্দেশ অমান্য করে দল থেকে লড়েছেন তিন জন। শনিবার তৃতীয় দফা উপজেলা নির্বাচনে সদরে জয়ী হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শরিফুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু।

এদিকে কুলিয়ারচরেও জয় পেয়েছেন বিএনপির নূরুল মিল্লাত। তার নিকটতম ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ হাসান সারোয়ার মহসিন।

এতে নিজ এলাকাতেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন সৈয়দ আশরাফ। বিপাকে পড়েছে দলও। তবে শুধু সৈয়দ আশরাফই নন, বেশিরভাগ মন্ত্রী-এমপির এলাকার চিত্রই এরকম।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ‘প্রভাবশালী’ কাজী জাফরউল্লাহও পারেননি বিদ্রোহীদের বশে আনতে। তার নির্বাচনী এলাকা চরভদ্রাসনে জয় পেয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বাদল আমিন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মোশাররফ হোসেন।

উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দুই পর্বে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের তুলনায় আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা জিতেছেন কম। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে ২৫ থেকে ৩০টি উপজেলায় জয় পেতে ব্যর্থ হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা।

এসব কারণে পরবর্তী ধাপের নির্বাচনগুলোতে সব উপজেলায় দল সমর্থিত একক প্রার্থী নিশ্চিত করার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু কেন্দ্রের এ উদ্বেগ আর চেষ্টার ছোঁয়া লাগেনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নির্বাচনী এলাকায়।
 
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় এবার আওয়ামী লীগ সমর্থন জানিয়েছে সৈয়দ আশরাফের চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুকে। কিন্তু এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন দলের আরও দুই নেতা আনোয়ার কামাল ও মফিজউদ্দিন। তাদের ভোটের ময়দান থেকে সরাতে না পেরে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও ফল হয়নি, হয়েছে হার।

তবে সৈয়দ আশরাফের নির্বাচনী এলাকার আরেক উপজেলা হোসেনপুরে বিদ্রোহী প্রার্থীকে বাগে আনতে পেরেছে আওয়ামী লীগ। এখানে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত আয়ুব আলীর পক্ষেই নেমেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ মাহবুবুল হক। তবে তার কর্মী সমর্থকদের একটি অংশ রয়ে গেছে নিষ্ক্রিয়। এ উপজেলায় বিএনপি কখনো ভালো না করলেও এবার আওয়ামী লীগের কোন্দল স্বপ্ন দেখাচ্ছে তাদের।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে অনেকটা অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। ইতোমধ্যে দুই দফার নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের জয়ের কাছে হোঁচট খায় দলটি। বিদ্রোহী প্রার্থীদের ঠেকাতে না পারায় উপজেলায় ভালো করতে পারেনি আগের দুই দফায়।

চতুর্থ উপজেলা পরিষদের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচনে হোঁচট খেয়ে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড। এ জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদের দায়ী করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিদ্রোহীদের নিষ্ক্রিয় করতে ব্যর্থ হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা, এলাকার মন্ত্রী, এমপি ও জেলা নেতাদেরও তিরস্কার করেন দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!