রাশিয়ার
রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের স্বায়ত্তশাসিত ক্রিমিয়া উপদ্বীপে রোববার সকাল থেকে গণভোট শুরু হয়েছে। এই ভোটকে কেন্দ্র করে ইউরোপের পূর্ব অংশে কোল্ড ওয়ার স্পাইলে নিরাপত্তা সঙ্কট শুরু হয়েছে। রাশিয়া এ গণভোটের পক্ষে থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা পশ্চিমা বিশ্ব এর বিরোধিতা করছে।
এদিকে ক্রিমিয়ায় গণভোটের প্রাক্কালে সহিংসতায় ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহরে মস্কোপন্থী ও কিয়েভপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচজন। গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
ক্রিমিয়ায় রোববার সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে। এ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ১৫ লাখ। এদের মধ্যে রুশপন্থীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় মস্কোর সঙ্গে যোগ দেয়ার পক্ষেই যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়বে তা এক প্রকার নিশ্চিত।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এ গণভোটের ফলাফলকে স্বীকৃতি দেবে না বলে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে শনিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত এক মার্কিন উদ্যোগ বাতিল হয়ে গেছে।ক্রিমিয়ার ভবিষ্যত প্রশ্নে রোববারের গণভোটের বৈধতা চ্যালেঞ্চ করে শনিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রস্তাব আনলে রাশিয়া তাতে ভেটো দেয়।
ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ক্রিমিয়ার মস্কোপন্থী সরকারের ডাকা ওই গণভোটের কোন বৈধতা নেই।
এদিকে ক্রিমিয়ার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই গণভোটকে ‘ক্রিমিয়ার বসন্ত’ বলে অভিহিত করছেন। তবে উপদ্বীপের অনেক সাধারণ মানুষই এখনও ভোট নিয়ে বিভ্রান্ত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন না পাওয়ায় তারা কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী এ অঞ্চলটির ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বিগ্ন। আর গণভোটের পরপরই ক্রিমিয়া রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে পারেছে না। এর যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে।
তবে রুশপন্থী নেতাদের উৎসাহ উদ্দীপনার অভাব নেই। গণভোট প্রসঙ্গে স্থানীয় নেতা সার্গেই আকসিওনভ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, ভোট শেষ হওয়ার পরও নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে রাশিয়ার অঙ্গীভূত হতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগতে পারে। তবে এ সময় এলাকাটিতে কোনোরকম আর্থিক ও আইনী সঙ্কট হবে না বলে জনগণকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
ইউক্রেন সরকার মনে করে ক্রিমিয়ার পক্ষে স্বাধীনভাবে টিকে থাকা সম্ভব নয়। কেননা বৈদ্যুৎ, জ্বালানি এবং পানির জন্য অঞ্চলটি বরাবরই ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
তবে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হলে এজাতীয় সমস্যা সহজেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে বিশ্বাস করছেন ক্রিমিয়ার আকসিওনভের মতো রুশপন্থী নেতারা।