আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০১৪ প্রথম রাউন্ডে নিজেদের দ্বিতীয় খেলায় নেপালের বিপক্ষে মঙ্গলবার মাঠে নামবে টাইগাররা। চট্টগ্রাম জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও বিশ্বকাপের নবাগত দল নেপালের মধ্যকার ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধা সাড়ে সাতটায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকোপের উদ্বোধনী দিনের খেলায় টাইগাররা রোববার মিরপুরে ৯ উইকেটে হারায় আফগানদের। অন্যদিকে একই দিন চট্টগ্রামে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে ৮০ রানে জয় পেয়েছে নেপালিরা। বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে পথে এগিয়ে যেতে দুই দলের জন্য এ ম্যাচটি সমান গুরুত্বের। এ ম্যাচে যে দল জিতবে তারাই দ্বিতীয় রাউন্ডের পথে এক ধাপ এগিয়ে থাকবে।
প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডের স্বপ্ন দেখছে নেপাল। তবে ক্রিকেট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এ দুটি দলের মধ্যে একবারও ব্যাটে বলে সাক্ষাত হয়নি। সেদিক দিয়ে দুই দলই প্রথম সাক্ষাতে ভালো কিছু করে দেখাতেই মাঠে নামবে। তবে নেপালের সঙ্গে টাইগারদের মাঠে সাক্ষাৎ না হলেও তাদের খেলাগুলো সাকিব মুশফিকরা ইউটিউব ভিডিওতে দেখেছেন বলে জানান সাকিব।
টাইগারদের বিপক্ষে জয় পাওয়া এতো সহজ নয়, বিশ্বকাপের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় নেপালের অধিনায়ক পরশ খড়কা আগেই জানিয়ে ছিলেন। তার ভাষায়,‘ স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা এখনও কোনো ক্রিকেট খেলিনি। আমরা জানি বাংলাদেশ অনেক শক্ত দল। তারা টেস্ট খেলুড়ে একটি দল। তাদের বিপক্ষে খেলার জন্য আমাদের যতটুকু সামর্থ্য আছে তা দিয়েই খেলবো।’
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য নেপাল স্বপ্ন দেখতেই পারে। তাতে দোষের কিছু নেই। তবে টাইগাররা নিজের মাঠে সব ম্যাচে জয় করেই দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার জন্য মুখিয়ে আছে। কথায় নয়, কাজেই প্রমাণ করতে চায় মুশফিকরা। টাইগারদের গ্রুপের একমাত্র ফেভারিট দল ছিলো আফগানিস্তান। সেই দলকেই মাঠে দাঁড়াতেই দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। টাইগারদের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৭৩ রানে অলআউট হয় আফগানরা। ম্যাচে সাকিব তামিমরা জয় পায় ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।
পারফরম্যান্স আর অভিজ্ঞতার দিক দিয়েও নেপাল ও হংকংয়ের চেয়ে অনেক ওপরে স্বাগতিকরা। তারপর আবার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে মুশফিকের পয়মন্ত মাঠে। যে মাঠে টাইগারদের জয়ের পাল্লাই বেশি। তাছাড়া টাইগারদের হারানো ফর্ম ফিরে পাওয়ায় এ ম্যাচে অবশ্যই মুশফিকদের ফেভারিট বলতে হবে। তারপর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে নিশ্চিত করে বলা কঠিন কে জিতবে।
রোববার মিরপুরে আফগানদের হারানোর পর অন্যতম বিশ্বসেরা আলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে জানান, ‘নতুন বলে আমরা নেপাল ও হংকংকে হালকা ভাবে নেব না। নেপাল ও হংকংয়ের বিপক্ষেও ভালো ক্রিকেট খেলবো। ভালো ক্রিকেট খেলেই আমরা বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে চাই। তাই নতুন বলে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। নেপালের সঙ্গে এখনও কোন ম্যাচ খেলিনি। তবে তাদের খেলাগুলো আমরা ইউটিউব ভিডিওতে দেখেছি।’
শুধু নেপালই নয়, ২০১১ সালে আইসিসি বিশ্বকাপের পর থেকেই চট্টগ্রামের মাঠে যতগুলো ম্যাচ খেলেছে মুশফিকরা তার বেশিরভাগ খেলাতেই জিতেছে টাইগাররা। একই মাঠে মুশফিকরা নেপালকেও হারাবে এমন আশা করতেই পারে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমিরা। তাছাড়া টাইগারদের ২৯ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে বিশ্বের সেরা সেরা ক্রিকেট দলগুলোকে এ মাঠেই হারানোর অভিজ্ঞতাও রয়েছে স্বাগতিকদের।
অন্যদিকে প্রতিপক্ষ নেপালের মানুষ ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে খুব বেশি দিন হয়নি। ১৭ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোন বড় প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ অর্জন করেছে উপমহাদেশের এই দেশটি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব অতিক্রম করে মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা।