নেপালের বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষাৎকে স্মরণীয় করে রেখে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা। আর ২৭ বল হাতে রেখে পাওয়া এ জয়ে বাছাই পর্বের এ গ্রুপ থেকে সুপার টেন পর্বে উঠে যাওয়া এক রকম নিশ্চিতই করে ফেলেছে স্বাগতিকরা।
জয়ের জন্য মামুলি ১২৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দুই ওপেনার আনামুল হক বিজয় এবং তামিম ইকবাল উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দলকে। তবে অতি আক্রমণাত্মক হওয়ার খেসারত দেন তামিম ইকবাল। ইনিংসের অষ্টম ওভারে ২২ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রানের ইনিংস খেলে রেগমির বলে সাগর পুনের তালুবন্দী হন তিনি। এ সময় স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৬৩ রান।।
অসাধারাণ ব্যাটিং করে দলকে সহজ জয়ের পথে এগিয়ে নিচ্ছিলেন আনামুল হক। কিন্তু ইনিংসের একাদশ ওভারে সতীর্থ সাব্বির রহমানের সঙ্গে অযথা ভুল বোঝাবুঝির কোরনে রান আউট হয়ে ফেরেন মাত্র ৩৩ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪২ রান করা ইনফর্ম এ ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ২ উইকেটে ৭৯। তবে অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে মোটেও কষ্ট হয়নি সাব্বির আহমেদ ও সাকিব আল হাসানের। বিশেষ করে ইনিংসের ১৫ ও ১৬তম ওভারে মারমুখী ব্যাটিংয়ের অনন্য নিদর্শন রেখে নেপালকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ছবক দেয় টাইগাররা। সাকিব মাত্র ১৮ বলে ১ চার ও ৪ বিশাল ছক্কায় ৩৭ রানে এবং সাব্বির ২০ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে বাংলাদেশী বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে খুব বেশী সুবিধা করতে পারেনি নেপাল। নির্ধারিত ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১২৬ রান। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ফরহাদের বলে ৮ রান করা খাকুরেল তালুবন্দী হন আব্দুর রাজ্জাকের। এ সময় দলীয় সংগ্রহ ছিল ১৯ রান।
এরপর পেসার আল আমিন হোসেনের জোড়া উইকেট শিকারে অনেকটাই কোনঠাসা হয়ে নেপাল। সপ্তম ওভারে তার এই জোড়া আঘাতের ধকল আর সামাল দিতে পারেনি নেপাল। সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই সাগর পুন ক্যাচ তুলে দেন সাকিব আল হাসানের হাতে। আর ১ বল পরেই মাল্লা লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন। ফলে প্রথম থেকে অনিয়ন্ত্রিত আল আমিন দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান জোড়া শিকার তুলে নিয়ে। এরপর স্বাগতিক অন্য বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে কোনভাবেই চড়াও হওয়ার সুযোগ পায়নি নেপালের ব্যাটসম্যানরা।
আবার ১৪তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে মুশফিক দুটি সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ইনিংসের ১ ওভার বাকী থাকতে অবশেষে চতুর্থ উইকেট জুটি বিচ্ছিন্ন হয়। মাশরাফি বিন মুর্তজা ১৯তম ওভারের শেষ বলে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান নেপালের অধিনায়ক পরশ খড়কাকে। খড়কা ৩৫ বল থেকে ৫ চারে ৪১ রান করে দলকে অনেকটাই এগিয়ে নেন। এ সময় দলীয় সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১২৪ রান। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হওয়ার আগে শরদ ভেশাওকর ৪৩ বলে ৫ চারে ৪০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে আল আমিন হোসেন ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রানের খরচায় ২ উইকেট তুলে নেন। এছাড়াও মাশরাফি ২৩ রানে এবং ফরহাদ রেজা ২৭ রানে ১টি করে উইকেট নেন।
এর আগে নেপালের বিরুদ্ধে সুপার টেন নিশ্চিত করার ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। চলতি আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শুভ সূচনা করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নেপাল ২০ ওভার ১২৬/৫ (খড়কা ৪১, ভেশাওকর ৪০, মাল্লা ১৩, সাগর ১২, খাকুরেল ৮, আল আমিন ২/১৭, মাশরাফি ১/২৩, ফরহাদ ১/২৭)
বাংলাদেশ ১৫.৩ ওভার ১৩২/২ (আনামুল ৪২, সাকিব অপরাজিত ৩৭, তামিম ৩০, সাব্বির অপরাজিত ২১, রেগমি ১/১৪)