প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদের কঠোর সমালোচনা করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, উপজেলা নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনে যে কেন্দ্র দখল এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তার দায় নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে তৃতীয় দফায় অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের তথ্য প্রকাশ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও সুজনের সহযোগী সমন্বয়কারী সানজিদা হক বিপাশা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, দেশে যে মুহূর্তে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে তখন সন্তোষজনক কারণ ছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এভাবে ছুটিতে যাওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচন কমিশন গা ছেড়ে দেয়ার কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশনকে ব্যর্থ বলেও উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, নির্বাচন কমিশন নিজের সাফাই গাচ্ছে। কমিশন বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। কমিশনকে এখন মানদণ্ড ঠিক করতে হবে আর কত বিশৃঙ্খলা হলে, আর কত মানুষ মারা গেলে তারা বলবেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।
স্থানীয় নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে হওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আইন করে তা হতে পারে। তবে এর পক্ষে-বিপক্ষে দুই ধরনের মতই রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদের সমালোচনা করে সুজন সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের সময় কারণ ছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এভাবে ছুটিতে যাওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে সুজনের সহযোগী সমন্বয়কারী সানজিদা হক বিপাশা বলেন, চতুর্থ ধাপে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া ২৯ শতাংশের বেশি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অর্থাত্ হত্যা মামলা রয়েছে তিন দশমিক ৯৫ শতাংশের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, দুই শতাধিক প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা স্নাতকোত্তর। চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ৯৮ জনের বার্ষিক আয় দুই লাখ টাকা বা এর চেয়ে কম। তবে এক কোটি টাকার বেশি আয় করেন পাঁচজন। আর ২৫৪ জন প্রার্থীর বার্ষিক আয় পাঁচ লাখ টাকার নিচে। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ৬৩ শতাংশের পেশা ব্যবসা। ৬৩ জন প্রার্থী ঋণগ্রহীতা। তবে ৩১৬ জনের কোনো ঋণ নেই।
চতুর্থ ধাপে ৪২টি উপজেলায় নির্বাচন হবে। তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৪৪৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। এর মধ্য থেকে ৩৭৯ জন প্রার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সুজন।