ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ স্বাধীন বাংলাদেশের সবচেয়ে গৌরবোজ্জল দুটি দিন হলো, মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর।ঐতিহ্যগত ভাবে এই দুটি দিনে আমাদের মতো দরিদ্র দেশের জনসাধারনও আমাদের সবচেয়ে গৌরবময় আর অহংকারের বিষয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের স্মৃতি স্মরন করে নিজেদের আলোকিত করতে চায়।
রাষ্ট্রীয় ভাবে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও ঐতিহ্যগত ভাবে পৃথিবীর অনেক দেশের মতো আমাদের স্বশস্ত্র বাহিনীর অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজ এবং সমরাস্ত্র প্রদর্শনী সাধারন জনতার প্রধানতম আকর্ষন হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে।কিন্তু কোন সুনির্দিষ্ট কারন ছাড়াই গত বছরের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ বাতিল করা হয় আসন্ন নির্বাচন (৫ই জানুয়ারী'১৪)অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী নিয়োজিত থাকবে এই অজুহাতে।কিন্তু প্রায় হাজার বিশেক সেনা সদস্যের অংশ গ্রহনে কুচকাওয়াের বদলে সবচেয়ে জাতীয় পতাকার তৈরির গিনেজ রেকর্ড ভঙ্গের অনুষ্ঠান করা হয় বিজয় দিবসে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে।
এই বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য যদি প্রায় মাসখানেকের পতাকা তৈরীর অনুশীলনে ব্যস্ত থাকতে পারে তবে কেন জনগনের অত্যন্ত প্রিয় সেনা কুচকাওয়াজ অথবা নিদেন পক্ষে কয়েকদিনের জন্য জাতীয় সমরস্ত্র প্রদর্শনী কেনো করা হলো না?।স্বশস্ত্র বাহিনীতে নতুন সংযোজিত অস্ত্ররাজী , যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ সমূহ দেখার সূযোগ থেকে কেনো বঞ্চিত করা হলো জনগনকে ?
যাক বিজয় দিবসের কথা।এবার আসি মহান স্বাধীনতা দিবস প্রসঙ্গে।স্বভাবতই এবার স্বাধীনতা দিবসের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ দেখার আশা করেছিলো সবাই।কিন্তু বিধি বাম,জানা গেলো এবারও নাকি জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্যারেডের বদলে ' লাখো কন্ঠে জাতীয় সংগীত' গাওয়া হবে, করা হবে নতুন গিনেজ রেকর্ড!যথারীতি এই অনুষ্ঠানটিরও সার্বিক তত্বাবধানে রয়েছেন সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য।দেশের সাধারন জনসাধারন এ ধরনের পতাকা তৈরী কিংবা লাখো কন্ঠে সোনার বাংলার মতো অভিনব অনুষ্ঠানের বিরোধী নয়।কিন্তু এসব অনুষ্ঠান মনোজ্ঞ সেনা কুচকাওয়াজ কিংবা আকর্ষনীয় সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর বিকল্প হতে হবে কেনো?
জাতির স্বাধীনতার গৌরব গাথাময় দিনগুলিতে বাংলাদেশের জনসাধারন স্বশস্ত্র বাহিনীর অংশগ্রহনে সামরিক কুচকাওয়াজ ও সমরাস্ত্র প্রদর্শনী দেখতে চায় প্রতি বছর,উদ্বুদ্ধ হতে চায় দেশপ্রেমে প্রতি নিয়ত।