মানুষের শ্রেণীভেদের মতো হারেরও কোন জাতপাত নেই। সবুজ, নীল বা হলুদ রংয়ের মতো নেই কোন বর্ণভেদও। কারণ, ‘হার’ মোক্ষম বিচারে হারই।
কিন্তু তারপরেও কিছু কথা থেকেই যায়। বিবেচনা করার শক্তি থাকার পরেও মানুষ অনেক ক্ষেত্রে সহজাতভাবে হারকে বরণ করে নিতে পারেন না। যেমনভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ভক্তরা হংকংয়ের কাছে মুশফিক বাহিনীর হারকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
টাইগার সমর্থকদের এই প্রত্যাশা একেবারে অমূলক নয়। একটি টেস্ট স্ট্যাটাসপ্রাপ্ত দলের হংকংয়ের মতো আনকোরা নবীন একটি ক্রিকেট শক্তির কাছে হারের লজ্জা পাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য ও হৃদয়বিদারক। বিষয়টা বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদেরও হয়তো পোড়াচ্ছে। কিন্তু শুধু পোড়ালেই তো হবে না, কাজে-কর্মেও তার প্রতিফলন দেখাতে হবে। ক্রিকেটারদের কমিটমেন্টের কারণেই এরকম প্রশ্ন উঠছে। বিশেষত কয়েকজন ক্রিকেটারের আউট হওয়ার ধরণ দেখে।
বৃহস্পতিবারের কষ্টের ওই সন্ধ্যায় হংকংয়ের বিরুদ্ধে ওমন কুৎসিত হার দেখার পর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তাই বইছে আলোচনার ঝড়। কেনো হংকংয়ের বিরুদ্ধে হারলো বাংলাদেশ? কেনো কিছু ক্রিকেটার অনেক দিন ধরে ক্লিক না করার পরেও জাতীয় দলে খেলেই যাচ্ছেন? তাদের খুঁটির জোরটা কোথায়? যাদের নিয়ে এমন কথা উঠছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলেন অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজার সেরা একাদশে অর্ন্তভূক্তি। মুমিনুলকে কেনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না তাও জানতে চায় অনেকে। প্রশ্ন আছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নাসির হোসেনের ফর্ম নিয়েও।
এ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জুলফিকার আলী জনি দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, ‘ফরহাদ রেজা নিয়মিত খারাপ খেলার পরও তাকে দিয়ে খেলানো হচ্ছে। অথচ এশিয়া কাপে দারুণ খেলা মমিনুলকে মূল একাদশে এবং জিয়াউর রহমানকে দলের বাইরে রাখা হয়েছে। নির্বাচকরা কেনো যে এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত বার বার নিচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে সুপার টেনে যেন এ ধরনের আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত না নেয়া হয় এ ব্যপারে বোর্ডকে অনুরোধ করবো।’
বাংলাদেশ দলের হংকং লজ্জার পর নীলক্ষেত গাউসুল আজম মার্কেটে কম্পিউটার কম্পোজ ও প্রিন্টিংয়ের ব্যবসা করা মোহাম্মদ হেলাল বলেন, ‘এই হারটা মেনে নেয়া কষ্টকর। তবে এর জন্য দায়টা আমাদেরই। আমরা প্রথম থেকে হংকংকে খেয়ে ফেলবো এমন একটা ভাব নিয়ে খেলেছি। কিন্তু খেলাটা তো ক্রিকেট। আর টিম নির্বাচনেও কোনো একটা ঘাপলা আছে। তাই ফরহাদ রেজা, মাহমুদুল্লাহর মতো ক্রিকেটাররা নিয়মিত খেলেই যাচ্ছেন। আর শামসুর রহমান শুভ ও মমিনুলের মতো পারফরমাররা দলে সুযোগ পাচ্ছেন না।’