থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, আন্দোলন এবং নির্বাচন বয়কটকে উপেক্ষা করে ২রা ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত একতরফা জাতীয় নির্বাচনকে বাতিল বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাংবিধানিক আদালত। শুক্রবার দেয়া এক রায়ে আদালত বলেন, সরকারবিরোধীদের বাধার মুখে নির্বাচন যথাযথভাবে অনুষ্ঠিত না হওয়ায় সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ২ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন সারা দেশে একযোগে অনুষ্ঠিত না হওয়াও সংবিধানের লঙ্ঘন। এএফপি এক প্রতিবেদনে জানায়, আদালতের এক মুখপাত্র বলেছেন, সাংবিধানিক আদালতের বিচারকরা ৬-৩ ভোটে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে বাতিল ঘোষণা করেছেন। আদালতের এ রায়ে প্রধানমন্ত্রী ইনলাক সিনাওয়াত্রা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে কয়েক মাসের আন্দোলন চলার পর নতুন সরকার গঠনের ক্ষণ আরও পিছিয়ে গেল।
আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শন বোনপ্রাকং বলেছেন, সাংবিধানিক আদালতের দেয়া এ রায় একেবারেই অপ্রত্যাশিত। তিনি আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সরকারবিরোধীদের প্রতি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বানচাল করার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ পর্যন্ত বতর্মান প্রধানমন্ত্রী ইনলাক সিনাওয়াত্রাই দায়িত্বে থাকবেন। এ রায়ের ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে আমরা কোন দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা আমার জানা নেই। ওই নির্বাচনের সময় থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের ২৮টি জেলার প্রার্থী সরকারবিরোধীদের বাধার মুখে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। এতে সেসব জেলায় নির্বাচন না হওয়ায় সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে রুলে জানান আদালত। আদালত থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন একযোগে অনুষ্ঠিত হয়নি। আদালতের এ রায়ের পর আবার কবে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়টি অবশ্য পরিষ্কার নয়।
থাই নির্বাচন কমিশনের সদস্য সোমচাই শ্রিসুথিয়াকর্ন বলেন, নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেশের সামনে দুটি বিকল্প রয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করতে রাজকীয় একটি ফরমান জারির জন্য আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি অথবা কখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সবচেয়ে ভালো হয়, তা ঠিক করতে আমরা সব রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি। তবে নতুন নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া হলে আবার বাধা দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা।
দেশের নির্বাচন একই দিনে সব নির্বাচনী এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া আগাম নির্দেশ ছাড়াই নিবন্ধন কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে কেন নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না_ মর্মে ব্যাংককের আইনের এক প্রভাষক আদালতে পিটিশন দায়ের করেছিলেন। সাংবিধানিক আদালত ওই পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতেই শুক্রবার দেয়া রায়ে নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করেন। রয়টার্স, আল জাজিরা, এএফপি।