জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মো. আবদুল মোবারক বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির বছরব্যাপী নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নিয়ে গালমন্দ করার অধিকার নেই। আগামীতে যারাই এসব করার চেষ্টা করবেন তাদের (ঢিল ছুড়লে পাটকেল খাবেন) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সাবেক প্রভাবশালী এই আমলা।
পঞ্চম ধাপের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সিইসির অনুপস্থিতিতে রুটিন দায়িত্ব পালনকালে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক ওই হুঁশিয়ারি দেন। তিনি আরও বলেন, গতবারের তুলনায় এবার নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তাই আমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। সোমবার ৫ ধাপের ৭৩ উপজেলা নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপি, এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোট জালিয়াতি, দুপুর গড়ানোর আগেই ভোটের বাক্স ভর্তি! নির্বাচনী সরঞ্জাম ছিনতাই ও আগুন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই ভোটকেন্দ্র দখল করে প্রকাশ্যে সিল মারাসহ সকল প্রকার অনিয়মের দৃশ্যই ছিল ভোটকেন্দ্রগুলোয়। এত কিছুর পরও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে ইসি দাবি করেছে।
অপরদিকে রবিবার আবদুল মোবারকের একটি বক্তব্যের জবাবে ইসিকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে দেয়া বিএনপির বক্তব্যের জবাবেও কথা বলেন তিনি। আবদুল মোবারক বলেন, আমরা যারা কমিশনে কাজ করি তারা এ দেশের নাগরিক। যারা রাজনীতি করেন তারাও এ দেশের নাগরিক। তাই আমদের সারা বছর গালি দেয়ার অধিকার তারা রাখেন না।
এ সময় কয়েকটি গণমাধ্যমের তীর্যক সংবাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি প্রথমে মুসলমান, তারপর বাঙালি এবং সর্বশেষ অসামপ্রদায়িক। এখানে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। নির্বাচনকে দলীয় করার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো প্রার্থীর দলীয় পরিচয় কমিশনের কাছে নেই। যারা আইন প্রণয়ন করেন এবং সরকার চালান তাদের উচিত বিষয়টি নিয়ে ভাবা। কমিশনের পক্ষ থেকে আইন প্রণেতাদের কাছে আবেদন থাকবে বিষয়টির একটা সুরাহা করার। তাই সরকারের কাছে আবেদন থাকবে আগামীতে এ ধরনের কোনো জটিলতা যাতে না থাকে সে জন্য আইন প্রণয়ন করা। সহিংসতার কারণে নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন স্থগিত হলে ভোটার ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের ডাবল কষ্ট করতে হয়। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় অর্থও ব্যয় হয়।
পরবর্তী ধাপের নির্বাচনের বিষয়ে মোবারক বলেন, যেসব নির্বাচন হয়নি সেগুলোর মেয়াদ শেষ হবে আগামী জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। সিইসি মহোদয় এলে আমরা বসব। এরপর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। সহসা হচ্ছে না। কারণ, এপ্রিল মাসে এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে। উল্লেখ্য, সোমবার ইসির জনসংযোগ অফিস থেকে বিফ্রিং হবে না বলে জানালেও পরবর্তীতে রাতে কমিশন তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।