অবশেষে ক্রিমিয়া ইস্যুতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আনা প্রস্তাবে বাংলাদেশের ভোট দানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এর জন্য সময় লাগলো মাত্র ৩সপ্তাহ। তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। এটা কোনোভাবেই দেশের পররাষ্ট্রনীতির ব্যত্যয় নয়।
ক্রিমিয়া ইস্যুতে রাশিয়ার আগ্রাসী ও অন্যায় পদক্ষেপের কারনে সমগ্র বিশ্বের প্রায় সব দেশ নিন্দায় সরব হলেও বাংলাদেশ সরকার ছিলো নিশ্চুপ ।এ বিষয়টি নিয়ে দেশীয় গন মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে।কিন্তু গতকাল সদ্য ওয়াশিংটন ফেরৎ আমেরিকান রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা ক্রিমিয়া প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে মিডিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অসন্তষ্টির কথা জানালে বাংলাদেশের টনক নড়ে ওঠে।
ক্রিমিয়া ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত হওয়ার ঘটনায় গত ২৭ মার্চ জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এর পক্ষে ভোট পড়ে ১০০ আর বিপক্ষে পড়ে ১১টি। আর বাংলাদেশ, ভারত ও চীনসহ ৫৮টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ক্রিমিয়ার বিচ্ছিন্ন হওয়ার পক্ষে গণভোটকে অসমর্থনযোগ্য বলে এবং রাশিয়ার সম্প্রসারণ প্রচেষ্টার বিপক্ষে ভোট দেয়।
গতকাল সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মিজনা বাংলাদেশের এ সিদ্ধান্তকে ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবনায় এটা স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার একীভূত হওয়াকে মেনে নেয়নি। গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্ত হতে না পারা দুঃখজনক।’
তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, ‘জি-৭৭ এবং জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) সদস্য দেশ হিসেবে আমরা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো পক্ষ অবলম্বন করতে পারি না। আমরা এ নীতি থেকে সরে আসিনি। আর এ কারণেই আমরা ভোট দানে বিরত থেকেছি।’
এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকসান্দর নিকোলায়েভ গত রোববার ওই প্রস্তাবে ভোট দানে বিরত থাকার কারণে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থানে কোন দেশ খুশি হলো কোন দেশ নাখোশ হলো তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। আমাদের অবস্থানের কারণে কোনো দেশ খুশি হতে পারে আবার অন্য দেশ অসন্তুষ্ট হতে পারে। আমরা এটা কেয়ার করি না।’