DMCA.com Protection Status
title="৭

রাষ্ট্রপতির নামেই উদ্ধার…

 

image_84420_0

গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর অনুমোদিত এবং পরে অনিয়মের অভিযোগে কার্যক্রম স্থগিত হওয়া ১২টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মধ্যে তিনটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয়। এ তিনটি কলেজের কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার প্রাথমিক অনুমতি দেয়া হয়েছে।


স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটি তিন মাস পর্যালোচনা শেষে মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রাণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক রুদ্ধতার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। রুদ্ধতার এ বৈঠকে দুটি মেডিকেল কলেজকে স্থগিত করারও সিদ্ধান্ত হয়।


কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার অনুমতি পাওয়া তিন মেডিকেল কলেজ হলো-  ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ (কাসিয়ার উদ্দিন ফাউন্ডেশন) এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয় সূত্র বাংলামেইলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে চলা এ বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক, বিএমএর মহাসচিব ইকবাল আর্সলান, স্বাচিপের একাধিক নেতা, সংসদ সদস্য সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলামেইলকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে কিছুই বলা যাচ্ছে না তবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা আরো গভীরভাবে পর্যালোচনা করে দেখবো। এর পরে সব জানতে পারবেন।’


এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি যে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের কর্যক্রম খারাপ দেখবো সেই কলেজের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ খুলে ব্যবসা করবেন তা হবে না। ব্যবসা করার আরো অনেক কিছু আছে।’


এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমরা আজ নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। তবে আরো গভীরে গিয়ে দেখতে হবে। আর আমাদের দেশের বেশিরভাগ বেসকারি মেডিকেল কলেজের কোনো না কোনো সমস্যা রয়েছে। তবে তার মানে এই না যে এই ধরনের অপরাধ মেনে নেবো।’
তিনি বলেন, ‘যে বেসরাকরি মেডিকেল কলেজের ব্যাপারে আমরা নমনীয় হয়েছি তদের নিজস্ব জমি এবং সেই জমির উপরে বিল্ডিং রয়েছে। এর পরও তাদেরকে আমরা বাড়তি ৬ মাসের সময় বেঁধে দিয়েছি। এই ৬ মাসের মধ্যে তারা আমাদের সকল চাহিদা পূরণ করবেন বলে মনে করছি। তা না হলে তাদের ব্যপারে আবার কঠোর হতে বাধ্য হবো।’


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে তড়িঘড়ি করে ১২টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। এর পরে বর্তমান সরকারের সময় গত ২২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি-সংক্রান্ত কমিটির সভায় বেসরকারি এসব মেডিকেল কলেজের অনুমোদন পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এবং সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমোদন পাওয়া নতুন মেডিকেল কলেজের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।


সূত্র জানায়, এসব মেডিকেল কলেজ অনুমোদনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অনুমোদনের বিনিময়ে আছে মোটা অংকের উৎকোচ বাণিজ্যের অভিযোগ।


নতুন অনুমোদন পাওয়া কলেজগুলো হচ্ছে- আদ্-দ্বীন-বসুন্ধরা মেডিকেল কলেজ (আকিজ ও বসুন্ধরা গ্রুপ), শাহ মাখদুম মেডিকেল কলেজ (উদ্যোক্তা— একজন প্রতিমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন আমলা), কেয়ার মেডিকেল কলেজ (উদ্যোক্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েরর সাবেক উপাচার্য মুয়াজ্জেম হোসেন), ইউনাইটেড মডিকেল কলেজ (উদ্যোক্তা ইউনাইটেড হাসপাতাল), ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ (আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতাল), রংপুর মেডিকেল কলেজ (কাসিয়ার উদ্দিন ফাউন্ডেশন), অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ (বর্তমান রাষ্ট্রপতি), খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ (পপুলার ফার্মা), স্কাইভিউ মেডিকেল কলেজ (সিলেট স্বাচিপের সভাপতি ইফতেশামুল হক চৌধুরী) পোর্ট সিটি মেডিকেল কলেজ (চট্টগ্রামের স্বাচিপ ও বিএমএর কয়েকজন নেতা), এবং ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ।


অন্যদিকে, স্থগিত ঘোষণার পরও পুরো দমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ মেডিকেল কলেজ। এর মধ্যে- খুলনার সিটি মেডিকেল কলেজ, আদ-দ্বীন আজিজ মেডিকেল কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ, মেরিন/পোর্ট সিটি মেডিকেল কলেজ, শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ ইত্যাদি।


জানা যায়, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ প্রথম ব্যাচে ৫০টি আসনের মধ্যে ৪৯ জন ভর্তি হয়েছে। টিউশন ফি ১৬ লাখ টাকা। আদ দ্বীন আজিজ মেডিকেল কলেজে প্রথম ব্যাচে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। তাদের টিউশন ফি নেয়া হয়েছে ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা করে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!