DMCA.com Protection Status
title="৭

সংসদীয় কমিটিতে সভাপতির পদ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ বিরোধীরা

images (4)মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে না রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের শরিক এবং স্বতন্ত্রদের পক্ষ থেকেও কাউকে ওই পদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিগত সংসদে বিরোধী ও শরিক দল থেকে চারটি সংসদীয় কমিটির পদ দেয়া হলেও এবার কেউ তা পায়নি।

অন্যদিকে এটিকে গণতন্ত্রের পশ্চাত্পদ বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য চলমান অধিবেশনে ইতিমধ্যেই সব সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার সম্মতিক্রমে সংসদের চিফ হুইপ আসম ফিরোজ একে একে কমিটিগুলো গঠনের প্রস্তাব করলে সংসদ তা অনুমোদন দেয়।

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা ছাড়া অনেকেই সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদের জন্য বিভিন্ন সময় সরকারকে চাপ দেন, ওপর মহলে তদবিরও করেন। কিন্তু সর্বশেষ মঙ্গলবার গঠিত সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদগুলোতেও তাদের নাম না দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নবম সংসদে বিরোধী দলকে তিনটি ও ক্ষমতাসীন জোটের শরিকদের ৪টি সভাপতি পদ দিয়ে সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়। এবারও সেই ঘোষণা থাকলেও তা হয়নি। সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুসরণ করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ৫টি সভাপতি পদ চেয়েছিল। নবম সংসদে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ একটি করে সভাপতি পদ পেলেও এবার সভাপতি পদে তারাও নেই। এমনকি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের জোট থেকে তিনটি সভাপতি পদ দাবি করা হলেও তারা বঞ্চিত হয়েছেন।

নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে আওয়ামী লীগদলীয় সদস্যদের মধ্য থেকে সভাপতি করে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। কমিটিতে জাতীয় পার্টির এমপিদের সভাপতির পদ দেয়া হলে আমরা সরকারকে আরও সহযোগিতা করতে পারতাম। দলের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিরোধী দল হিসেবে আমাদের মূল্যায়ন করা উচিত ছিল। সংসদীয় কমিটির সভাপতি হওয়ার মতো অনেক যোগ্য এমপি জাতীয় পার্টিতে রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  বলেন, আমরা এখন সবক্ষেত্রেই গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার বিপরীতমুখী যাত্রী। বিগত সংসদে বিরোধী দল বয়কট করত বলে সমালোচনা করছি আমরা। এবারের সংসদে প্রকৃতপক্ষে কোনো বিরোধী দল নেই। তবুও সরকার এবং জাতীয় পার্টি থেকে দাবি করা হচ্ছে সংসদে বিরোধী দল আছে। যে ধারা অব্যাহত ছিল তা চালু রেখে এবার অন্তত ৮টি কমিটির সভাপতির পদ অন্য দলকে দেয়া যেত। কিন্তু কেন তা করা হয়নি তা আমার বোধগম্য নয়। এটি কোনো সুখবর নয়।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন. পাতানো বিরোধী দলকেও ছাড় দিতে চাচ্ছে না সরকার। সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদে এদের প্রতিনিধি থাকুক না থাকুক তাতে কিছু যায়-আসে না। কিন্তু বিগত ধারা অব্যাহত রেখে সরকার প্রমাণ করার চেষ্টা করতে পারত— তারা সঠিক পথে আছে। কিন্তু তাও করতে পারল না। এখন সব দিক দিয়েই উল্টো দিকে যাচ্ছি আমরা।

এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে সভাপতি করে এবারের সংসদে ১৬ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নিয়ে একটি জোট গঠন করা হয়েছে। সরকারে যোগ না দেয়ার ঘোষণা দিয়ে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করার ঘোষণা দিয়েছে এই জোট। তাদের দাবি ছিল অন্ততপক্ষে তিনটি সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদ দেয়া হোক তাদের। কিন্তু তা না পেয়ে হতাশ তারা। এ বিষয়ে হাজী সেলিম দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  বলেন, এ ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র এমপিদের মূল্যায়ন করা হয়নি। আমাদের অন্ততপক্ষে দুজনকে সভাপতির পদ দিলে ভূমিকা রাখতে পারতাম।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় পার্টির একাধিক এমপি দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, মহাজোটে থাকা অবস্থাতেও আমরা আওয়ামী লীগের কাছে সুবিচার পাইনি। এবার নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের যে প্রাপ্য তাও দেয়া হচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!