মহাদেশগুলোর মধ্যে এশিয়া মহাদেশ খুব দ্রুতই জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হচ্ছে। আর এই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাবার পানি সঙ্কটে পড়বে এশিয়া। তাই পানি নিয়ে এশিয়ার দেশসমূহ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে যুদ্ধ হতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত একটি কমিটির করা এক রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্টে শঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, এশিয়ার সামনে খারাপ সময় অপেক্ষা করছে। এখনই যদি কোনো পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক কিছুই ঘটতে পারে। ভারত এখনো অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যদি ভারতে আগামীতে এক ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়ে তাহলে দেশটির জাতীয় উৎপাদন ১ দশমিক ৭ শতাংশ কমে যাবে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়, গতবছর ভারতের উড়িষ্যাতে যে প্রলয়ংকরী ফাইলিন আঘাত হেনেছিল তেমনি অনেকগুলো ঘুর্ণিঝড় হতে পারে সামনে। যা বিশাল ক্ষয়ক্ষতি বয়ে আনবে।
জলবায়ু কমিটির চেয়ারম্যান আর কে পাচৌরি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে এই গ্রহের কেউই রেহাই পাবে না।’
জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা যেমন প্রাণবৈচিত্রের উপর পড়বে তেমনি এশিয়ার পর্যটন শিল্পের উপরও পড়বে। আর এই কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত। কারণ ভারতের অর্থনীতির একটি বিশাল অংশ জুড়ে আছে পর্যটন শিল্প। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টি শুধুমাত্র ভবিষ্যতের ব্যাপার নয়। এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এখনই এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোনো কোনো অঞ্চলে অতিরিক্ত তাপের কারণে জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আবার কোথাও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির হার বাড়ছে।
তবে জাতিসংঘের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি মোকাবেলা করতে গিয়ে এশিয়ার দেশগুলো নিজেদের ভেতর সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পরতে পারে।
রিপোর্টটির প্রধান লেখক আরোমার রেভির মতে, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবার আগে এই অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এই অঞ্চল এমনিতেই বন্যাপ্রবন। একের পর এক বন্যা এই অঞ্চলের পানির উৎসকে নষ্ট করে দেবে। আর বন্যা পরবর্তীতে যে খরা হবে তাতে অনেক নদী শুকিয়ে যাবে। দীর্ঘদিন ধরেই ব্রহ্মপুত্র নদী নষ্ট হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। মালদ্বীপ, চীন, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। যেহেতু ভারত এবং চীন এশিয়ার ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই তারাই প্রথম পানির জন্য সশস্ত্র অবস্থান নেবে। এখনই খেয়াল করতে দেখা যায় যে, এশিয়ার ক্ষমতাধর দেশগুলো তাদের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিবর্তন করছে এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে।