DMCA.com Protection Status
title="৭

কাউকে ধূমপান ত্যাগ করানোর সবচাইতে কার্যকরী উপায় !

8760ধূমপান যে শরীরের জন্য খারাপ তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু তা মানি কয়জন? অনেকেই আছে যারা কোনো কারণ ছাড়াই ধূমপানে আসক্ত। যখন স্বাস্থ্য খারাপ হতে শুরু করে তখনই তারা ধূমপানের অভ্যাস ছাড়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠেন। কিন্তু সেটাই কি সহজ? ধূমপান ছাড়ার জন্য অনেক উপায় আছে। কেউ সাইকোথেরাপির সাহায্য নেন, কেউ চুইংগাম চিবুতে থাকেন, কেউ বা নিকোটিন প্যাচের সাহায্য নেন। একটি উপায়ে কাজ না হলে অনেকে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া একসাথে ব্যবহার করতে থাকেন। কিন্তু এখন সম্ভবত ধূমপান বর্জনের সবচাইতে ভালো উপায় বের হয়েছে। একজন ধূমপায়ীকে “ঘুষ” দিয়ে তার আসক্তি ছাড়াতে পারা যায় খুব সহজে!



ঘুষ হিসেবে শুধু টাকা-পয়সাই নয় বরং লটারির টিকেট, বিভিন্ন সেবার ভাউচার বা এ ধরণের যে কোনো আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হলে তা কাজ করে জাদুর মতো। তাদেরকে এসব উপহার দিয়ে যদি ধূমপান আসক্তি ছেড়ে দিতে বলা হয়, তবে দেখা যায় তারা খুব সহজেই তা মেনে নিচ্ছেন এবং ছেড়ে দিচ্ছেন ধূমপান!

কীভাবে কাজ করে এই পদ্ধতি?



মনোবিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, ধূমপায়ীদের আর্থিক উপহার দেওয়ার ফলে দেখা যায় খুবই ভালো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত ধূমপায়ীরা ধূমপান ছাড়ার ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। কিভাবে ধূমপানের আসক্তি দূর করা যাবে এ ব্যাপারে তাদেরকে উপদেশ দেওয়া হলেও খুব একটা আগ্রহ দেখান না। কিন্তু তাদেরকে যদি একেবারে হাতেনাতে টাকা বা ভাউচার ধরিয়ে দেওয়া হয়, তবে তারা উৎসাহী হয়ে ওঠেন। এমনকি বেশ কম পরিমাণে টাকা দিলেও তারা খুশি হয়ে যান।



অবাক করার মতো একটি ব্যাপার হলো, টাকার পরিমাণ বাড়ালেও তাদের উৎসাহ বাড়ে না বরং একই রকম থাকে। অর্থাৎ মোটামুটি যে কোনো অংকের টাকা দেওয়াই মানুষকে উৎসাহী করে তোলার জন্য যথেষ্ট! তবে টাকা দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে মানুষ উৎসাহ হারিয়ে ফেলে, এটাও দেখা গেছে।



একটা মানুষকে যদি কিছু পরিমাণে টাকা দেবার ফলে তার ধূমপানে আসক্তি চলে যায় তবে তাতে অনেক লাভ। এতে তার ভবিষ্যতে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম, সেই চিকিৎসার খরচ বেঁচে যায়। ধূমপান ত্যাগের অন্যান্য প্রক্রিয়াতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয় সেটাও বেঁচে গেল। তাই এই পদ্ধতি ব্যবহারের ওপরে ভরসা করছেন গবেষকেরা। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদেরকে এইভাবে ধূমপানে ছেড়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে, কারন সেই ধূমপানে তার গর্ভের সন্তানেরও ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক।

কীভাবে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করবেন প্রিয়জনের ক্ষেত্রে?



প্রিয়জনের ক্ষেত্রে নানানভাবে এই “পুরস্কার” পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন আপনি। সন্তান বা বন্ধু হলে নগদ টাকা হতে পারে উপহার। স্বামী/স্ত্রী, মা/বাবা বা অন্য কেউ হলে নানান রকম উপহারকে বেছে দিন। এমনকি উপহার হতে পারে আপনার বাড়তি সময় ও ভালোবাসাও।



প্রথমে বলুন, তুমি ধূমপান কমালে আমি তোমাকে “এটা” দেব।



কাজটি সে করলে তাঁকে সেই বিশেষ পুরস্কার দিন। এরপর বলুন, তুমি এই ধূমপান কম করা ধরে রাখতে পারলে আমি তোমাকে “সেটা” দিব।



সে যখন সত্যি কাজটি করতে পারবে, তখন অবশ্যই পুরস্কার দিন। এবং পরবর্তী লক্ষ্য গুলো ক্রমান্বয়ে সেভাবেই নির্ধারণ করতে থাকুন। যেমন-



তুমি ১ দিন ধূমপান একদম না থাকলে এই পুরস্কার পাবে।



এই ১ দিন থেকে ২ দিন, ২ দিন থেকে ৩,৪,৫ দিন। এভাবে বিষয়টি চালাতে থাকুন। যখন দেখবেন ধূমপান না করায় সে বেশ অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে, তখন শেষ উপহারটি ঘোষণা করুন- তুমি ধূমপান একদম ছেড়ে দিতে পারলে আমি তোমাকে “ঐটা” দিব।



উপহারটি এমন কিছু হতে হবে যেন তাঁর খুব আকাঙ্ক্ষিত হয়। যেহেতু ধূমপান ছেড়ে থাকা তাঁর ক্রমশ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, দেখবেন একেবারে ছেড়ে দিতে তাঁর খুব একটা কষ্ট হবে না। সে ঠিকই ছেড়ে দিতে পারবে মনের মত আকর্ষণীয় উপহার হলে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!