চট্টগ্রামঃ নিজ দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার পর এবার তাদের বিরুদ্ধে সুবিচার পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক নাসির করিম বাবুল। তবে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।
শনিবার দুপুরে চবি ক্যাম্পাসে এক শোক সভায় যোগদানের সময় নিজ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল। অভিযোগ রয়েছে, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর উপস্থিতিতে তার অনুসারী চবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাব্বির আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলকে মারধর করে হাত বেঁধে তার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে দেয়।
তবে এঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলে দাবি করেছেন চবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাব্বির আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার সাথে কারা জড়িত আমরা জানি না। এসময় আমরা মসজিদের পাশের দোকানে ফুচকা খাচ্ছিলাম।’
এ ঘটনায় চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির করিম বাবুল কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে বিচার দিলেও এখনো কোনো বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। কাবুল বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির একজন সহ-সম্পাদক হিসেবে বিয়টি কেন্দ্রীয় নেতা ও স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতাদের জানিয়েছি। তবে তারা আমার প্রতি সহানুভূতি জানানো ছাড়া আর কিছুই করেননি। এ ঘটনায় মৌলবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর সাহস বেড়ে যাবে এবং সংগঠনের প্রতি সাধারণ কর্মীদের আস্থা হারাবে। তাই এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল বলেন, ‘ঘটনার পরদিন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা এর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে বলেছিল। কিন্তু এখনো কোনো কিছুই দৃশ্যমান হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতা কিংবা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছুই বক্তব্য পাচ্ছি না।’
আইনি কোনো পদক্ষেপের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। তবে যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তারা তো ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলায় গেলে সেটি ভিন্নখাতে নিয়ে যাবে। আর এসব করে তাদের সাথে পেরে উঠা যাবে না। এছাড়াও এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পাবো কি না তা নিয়েও আমার সন্দেহ আছে।’
তবে ছাত্রলীগ নেতার হাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাকে নেক্কারজনক উল্লেখ করে তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি যারাই ঘটিয়েছে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। বিষয়টি সরাসরি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা মনিটরিং করছেন। আগামী বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য কর্মী সম্মেলনে তারা এলে হয়তো উত্থাপিত হতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে আওয়ামী লীগ নেতা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাটি আমরা তদন্ত করে দেখবো। এরপর জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’