সরকার, প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কোনো শত্রুতা নেই মন্তব্য করে সংগঠনটির আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি বলেছেন, ‘তারা আমাদের শত্রু নয়, তাদের শত্রু ভাবা যাবে না।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাদ মাগরিব চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের দুই দিনব্যাপী শানে রেসালত সম্মেলনের প্রথম দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আল্লামা শফি ক্ষমতাসীন দল সম্পর্কে আরো বলেন, ‘হাসিনা, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ আমাদের শত্রু নয়। এদের শত্রু ভাবা যাবে না। তবে আল্লাহর নেয়ামত খেয়ে এ দেশে থাকতে হলে আল্লাহর আইন মানতে হবে। যারা আল্লাহর বিভিন্ন ধরনের নেয়ামত ভোগ করার পরও আল্লাহকে মানে না, তারা এদেশে থাকতে পারবে না।’
সরকারকে তওবা করার আহ্বান জানিয়ে হেফাজতের আমির বলেন, ‘আপন ভালো হলে জগত ভালো। আসুন আমরা তওবা করি- চুরি, টেন্ডারবাজি, জেনা-ব্যভিচার, হানাহানি, রক্তপাত, খুন, পরের সম্পদ লুণ্ঠন করবো না। আমরা ভালো হলে দেশটা ভালো হবে, সত্যিকারের সোনার বাংলা হবে এই দেশ।’
নাস্তিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই নাস্তিকেরা তোমরা বুঝো, তোমরা মুসলমান হয়ে যাও, আল্লাহকে মানো, না হয় এদেশে থাকতে পারবে না।’
আহমদ শফি বলেন, ‘আমি আজ কোনো কথা বলতে আসিনি। আপনাদের সাথে মোলাকাত (সাক্ষাৎ) করতে এসেছি। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। যতদিন বেঁচে আছি, যাতে দ্বীনের (ইসলাম) ওপর অটল থাকতে পারি, দ্বীনের কাজ করে যেতে পারি এই দোয়া করবেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আল্লামা জুনায়েদ বাবু নগরী বলেন, ‘এ দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানহ সব ধর্মের লোকজন বসবাস করতে পারবে কিন্তু কোনো নাস্তিক থাকতে পারবে না। আল্লাহ ও তার রাসূলের (স.) সঙ্গে বেয়াদবি করলে কারো ধরের (শরীর) সাথে মাথা থাকতে পারে না। কিন্তু আমরা আইন হাতে তুলে নেব না। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই এর ফয়সালা সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’
তিনি সরকারকে আগামী সংসদ অধিবেশনে নাস্তিকদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাশ করার আহ্বান জানান।
পুলিশের শর্ত মানতে গিয়ে কড়া নিরাপত্তা এবং মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির পর সম্মেলনে আগত হাজার হাজার অতিথি সামলাতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আয়োজকদের। বিকেল ৩টায় সম্মেলন শুরু হলেও প্রধান অতিথি ও হেফাজত আমির মঞ্চে আসেন মাগরিবের নামাজের পর।
শানে রেসালত সম্মেলনের প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমির আল্লামা শামসুদ্দোহা।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবু নগরী, ড. আফম খালেদ হোসেন, ড. মোস্তফা আল হোসাইনী, আজিজুল হক আলমাদানী, মাওলানা মুজিবুর রহমান যুক্তিবাদী, ঢাকা লালবাগ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শাখাওয়াত, আল্লামা মুফতি আমিনীর ছেলে মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, হেফাজতের কেন্দ্রিয় যুগ্ম-সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, হেফাজতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরীর প্রচার সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন, কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, দারুল মঈনুল মাআারিফ মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা ফোরকান আহমেদ, ফটিকছড়ি নানুপুর মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা কুতুব উদ্দিন, হাফেজ মহিউদ্দিন প্রমুখ।