ব্রিটিশ মোটর ইনস্যুরেন্স কোম্পানি অ্যাডমিরালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হেনরি এঙ্গেলহার্ডট। অন্যসব বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের মতো নন তিনি। তিনি চান, তাঁর কর্মীরা মজা করে কাজ করুক। এভাবে গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জন করে প্রতিষ্ঠান ও নিজের অর্থনৈতিক উন্নতি করুক।
গতকাল রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৫৬ বছর বয়সী এই ব্যক্তি আসলে মার্কিন নাগরিক। তাঁর বৃহত্ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সঙ্গে সব সময় বন্ধুসুলভ ও খোলামেলা আচরণ করেন। প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার প্রচলিত কাঠামোর বাইরে গিয়ে তিনি বিরল একটি ধারার প্রচলন ঘটিয়েছেন।
অ্যাডমিরালের যাত্রা শুরু ১৯৯৩ সালে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যের অন্যতম বড় ও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
অ্যাডমিরালে একটি ‘মিনিস্ট্রি অব ফান’ রয়েছে। ওই দলের সদস্যরা প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের জন্য প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কার্যক্রম আয়োজন করেন। এর মধ্যে রয়েছে জমকালো পোশাকে অফিসে আসা, রাতে ঘুরতে বের হওয়া, খাবার বিরতির সময় কম্পিউটার গেমস প্রতিযোগিতার আয়োজন ইত্যাদি।
হেনরি ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের অন্য শীর্ষ ব্যবস্থাপকদের কোনো অফিশিয়াল গাড়ি নেই। তাঁর নিজের অফিস কক্ষও নেই। খেলা ফ্লোরে ডেস্কে বসেন তিনি।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে হেনরির এসব অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের মূলে রয়েছে, তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানকে একটি আনন্দময় কর্মক্ষেত্রে পরিণত করতে চান। তাঁর প্রতিষ্ঠানে সব কর্মী সমান। সবাইকে প্রায় সমানভাবে মূল্যায়ন করা হয়।
কর্মীদের এমন স্বাধীনতা ও ছাড় দেওয়ায় হেনরির প্রতিষ্ঠান রসাতলে যায়নি। বরং তা আরও ভালো করেছে। মুনাফা অর্জনও চমকপ্রদভাবে বেড়েছে।
নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে হেনরি বলেন, ‘আমাদের নীতি খুব সহজ। কর্মীরা যদি তাঁদের কাজটা পছন্দ করেন, তাহলে তাঁরা আরও ভালো করতে পারবেন। অথবা ভিন্নভাবে বললে, আনন্দ করে কাজ করো। গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করো। টাকা বানাও। কর্মী যদি তাঁর কাজটা নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকেন, মনমরা হয়ে থাকেন, পরশ্রীকাতর হন, তাতে প্রতিষ্ঠানের কোনো উপকার হবে না।’
হেনরির মতে, সুখী কর্মী মানে গ্রাহকের সুখ। এতেই আসে অর্থ।