ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শুধু প্রতিমন্ত্রীই নয় স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ অনুষ্ঠানের অতিথি সবাই জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে উঠেন। তবে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ মিনারকে প্যান্ডেলে ঢেকে ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি করা হয়।
মঙ্গলবার জেলা সদরে পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে এ ঘটনাই ঘটে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল ছিলেন প্রধান অতিথি। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বন্দীপ কুমার সিংহ রায়, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকার আয়েশা মেমোরিয়াল স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্ত্তী।
পরে সরাইল থানা ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন শেষে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেই চক্রান্তের মুখেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশ, আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকা চায় না। মানুষ শান্তি চায়। এসরকারের সময়ে শান্তির সুবাতাস বইছে। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অজন করেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশকে আলোকিত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
স্থানীয়রা জানায়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ মিনারকে প্যান্ডেলে ঢেকে ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি করা হয়। শহীদ মিনারের তিনটি স্তম্ভকে চাদর দিয়ে আড়াল করে বেদিতে করা হয় অতিথিদের বসার মঞ্চ আর সামনে করা হয় দর্শকদের বসার স্থান।
অতিথিরা জুতা পায়েই শহীদ মিনারের ওই মঞ্চে ওঠেন। এসময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বন্দীপ কুমার সিংহ রায়, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর প্রমুখ ।
শহীদ মিনারে মঞ্চ দেখে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অনেকেই বিস্মিত ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আইরিন বলেন, আমরা এতদিন জানতাম শহীদ মিনারে জুতা নিয়ে উঠতে নেই। এটি অত্যন্ত শ্রদ্ধার জায়গা। আজ দেখলাম শহীদ মিনারে জুতা নিয়ে খোদ মন্ত্রীসহ সব অতিথিরা উঠছেন।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ও ঢাকাস্থ আয়েশা মেমোরিয়াল স্পেশালাইজড হাসপাতালের (প্রাইভেট লিমিটেড) ব্রাহ্মণবাড়িয়া লিঁয়াজো অফিসের ইনচার্জ সঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, এটি বড় ভুল হয়ে গেছে। এখন তো আর কিছু করার নেই।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আইয়ুব খানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত বলে ফোন রেখে দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, এটি যে শহীদ মিনার তা আমাদের জানা ছিল না।তবে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো।
আয়েশা মেমোরিয়াল স্পেশালাইজড হাসপাতালের (প্রাইভেট লিমিটেড) চেয়ারম্যান ডা. প্রীতি চক্রবর্ত্তীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।