সিলেট: হেফাজত নেতাদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে রাস্তায় নামালেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তবে আরিফের এমন আচরণের জবাব আগামী সিটি নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজত নেতারা।
গত শুক্রবার বাদ জুমা নগরীর কোর্ট পয়েন্টে পহেলা বৈশাখে ‘নাচ-গান, পান্তা ইলিশের ঐতিহ্য’ বন্ধের দাবিতে হেফাজতের নেতারা ‘ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ প্রতিরোধ সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ’ এর ব্যানারে প্রতিবাদ সভা করে।
হেফাজত নেতারা সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘মেয়র নির্বাচনের আগে ও পরে আপনি বলেছিলেন হেফাজত নেতাকর্মীদের ভোটে ও সহযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু এখন আপনার সহযোগিতায় নগরীতে পহেলা বৈশাখের নামে ‘নাচ-গান, ‘পান্তা-ইলিশ’ উৎসব হবে এটা ধর্মপ্রাণ মানুষ মেনে নেবে না।’
তখন হেফজতের নেতারা হুমকি দিয়ে মেয়র আরিফকে বলেন, ‘যদি পহেলা বৈশাখে নগরীতে ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ অনুষ্ঠিত হয় তা হলে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ।’
কিন্তু হেফাজতের নেতাদের এমন হুমকি উপেক্ষা করে চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে রাস্তায় নামালেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীতে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এতে অংশ নেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। মৌসুমীকে দেখতে এসময় রাস্তায় ভিড় জমে। শোভাযাত্রার আগে সারদা হলের সামনে সিটি করপোরেশন আয়োজিত বৈশাখি মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মৌসুমী। এসময় তিনি সিলেটবাসীকে নববর্ষেব শুভেচ্ছা জানান। করতালির মাধ্যমে উপস্থিত সিলেটবাসীও মৌসুমীর শুভেচ্ছার জবাব দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল, রাজিক মিয়া, দিনার খান হাসু, তৌফিকুল হাদী প্রমুখ।
জানা যায়, সিলেট সিটি করপোরেশনের নববর্ষের আয়োজন এবার স্পন্সর করেছে আরএফএল প্লাস্টিক লিমিটেড। তাদের সৌজন্যে সিলেট আসেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। সকালে হেলিকপ্টারযোগে তিনি সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে নামেন। মধ্যাহ্নভোজের পর হেলিকপ্টার যোগে মৌসুমী ঢাকায় উদ্দেশে সিলেট ত্যাগ করেন।
এ ব্যাপারে হেফাজত নেতা মাওলানা আছলাম রহমানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মেয়র আরিফের এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা সবসময় ইসলাম বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন করি। মেয়র আরিফ আমাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি যদি এমন ইসলাম বিরোধী কাজ করেন তাহলে এই পাপের ভাগও আমাদের ঘাড়ে আসবে।’
মেয়র আরিফের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানানো হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামী সিটি নির্বাচনে এর জবাব দেয়া হবে।’
এ ব্যাপারে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া জানার জন্য বারবার তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।