নারী হিসেবেই তিনি এতোদিন নিজেকে জানতেন। সমাজেও একজন নারী হিসেবেই সম্মান পেতেন। পাড়ালেখা শেষে তিনি পুলিশে চাকরিও নেন নারী হিসেবে। কিন্তু হাঠাৎ বদলে দেয়া হলো তার জীবন। চাকরি হারাতে হলো তাকে। সরকারিভাবে নামের পাশে বসিয়ে দেয়া হলো একটা বিশেষণ। শুরু হলো নতুন পরিচয়।
কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ার মানুষ তিনি নন। আদালতের কাছে গেলেন নিজের আর্জি নিয়ে। ২৫ বছর বয়সের এ তরুণী আদালতকে জানান, বরাবরই নিজেকে নারী হিসেবেই জেনে এসেছেন তিনি। স্কুল-কলেজেও ছিল সেই পরিচয়। নারী প্রার্থী হিসেবে চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে চেন্নাই পুলিশে কনস্টেবল হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু কয়েকমাস পরই তাকে ডাক্তারি পরীক্ষা করতে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তাকে নারী থেকে বানিয়ে দেয়া হয় রূপান্তরকামী। তারপর নিজের পরিচয় লুকনোর অভিযোগ তুলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
সবকিছু শোনার পর মাদ্রাজ হাইকোর্ট পুলিশ দপ্তরের সমালোচনা করে জানান, এ ভাবে কাউকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য বাধ্য করে শুধুমাত্র ডাক্তারি নিয়মের হিসাবে রূপান্তরকামী বলে দেয়াটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। যিনি বরাবর সমাজের চোখে নারী হিসেবে স্বীকৃত, শুধুমাত্র কয়েকটা ডাক্তারি পরীক্ষায় তাকে রূপান্তরকামী ঘোষণা করে ব্যক্তিগত অধিকার হরণ করা হয়েছে।
বিচারক এস নাগামুথু বলেন, ‘শুধু ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে একজনের লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায় না। তিনি মানসিক ও সামাজিকভাবে যে সত্ত্বা বহন করেন, তাও এক্ষেত্রে বিচার্য।’
আদালতের এমন মহতী রায়ে ওই কনস্টেবল নারী হিসেবেই ফিরে পেয়েছেন তার চাকরি। তিনি আমৃত্যু নারী হয়েই কাজ করবেন ভারতীয় পুলিশে।