ভারতে একের পর এক ঘটছে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনা। দেশটির রাজধানীতেও নেই মেয়েদের জন্য নিরাপত্তা। এ জন্য চিন্তায় পড়েছে প্রশাসনও। তবে মেয়েদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল বাবার কাছেও এখন আর নিরাপদ নয় দেশটির মেয়েরা। একের পর এক ঘটে যাচ্ছে ন্যাক্কাজনক ঘটনা।
সর্বশেষ ভারতের জবলপুরের বর্গী গ্রামে মাসের পর মাস ধরে বাবার বিকৃত লালসার শিকার হতে হয়েছে অন্ধ মেয়েকে। গত ২৩ মে জেলা হাসপাতালে ওই অন্ধ মেয়েটি একটি সন্তান প্রসব করে। পুলিশ অভিযুক্ত বাবা মিত্তর তরমকে গ্রেপ্তার করেছে।
জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে মেয়েকে ধর্ষণ করছিল বাবা। বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে, বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয় তাকে। ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্তান জন্ম দেয় মেয়েটি।
এদিকে গত মাসে এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। উত্তরপ্রদেশের নয়ডা এলাকায় পর্নো ছবি দেখিয়ে নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করেন এক বাবা। পরে নয়ডা শহরের দাদরি কোতোয়ালী থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত এক বছর থেকে মেয়েকে পর্নো ছবি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছে তারই বাবা। ১৪ বছরের ওই কিশোরীর মা তার স্বামীর নামে থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করে। পুলিশ জানায়, দাদরির ন্যাদরগঞ্জ কলোনির ওই ব্যক্তি এবং তার স্ত্রী শহরের এক বেসরকারি স্কুলের কর্মচারী। তাদের মেয়ে একটি সরকারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। কয়েক দিন আগে সে নয়ডার কাছে একটি বিয়েতে যোগ দিতে নিজের মাসির বাড়ি যায়। বিয়ের পর সে নিজের বাড়ি যেতে অস্বীকার করে। পরে মা এবং মাসির চাপে পড়ে বাড়ি না যাওয়ার কারণ জানায়। বাবাকে সে বাধা দিলে তাকে মারধর করা হতো বলেও জানায় ওই কিশোরী।
ওই কিশোরী জানায়, তার মা যখন কাজে চলে যেতেন, তারপরই তার বাবা তাকে পর্নো ছবি দেখিয়ে ধর্ষণ করতেন।
শুধু তাই নয় গত ফেব্রুয়ারিতেও নিজের বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনে স্কুলগামী এক কিশোরী। হরিয়ানা রাজ্যের সোনেপাত গ্রামের ওই কিশোরী পুলিশকে জানায়, তার বাবা তাকে ধর্ষণ করে। মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পরে ধর্ষক বাবাকে আটক করে রাজ্য পুলিশ।
দিল্লি থেকে এক ঘণ্টারও কম দূরত্বে অবস্থিত সোনেপাতের এই কিশোরী পুলিশকে জানায়, বেশ কয়েক মাস আগে গ্রামের কয়েক জন ছেলের হাতে দু দুবার গণধর্ষণের স্বীকার হয় সে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত যুবকদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে।
কিন্তু এ ঘটনার পর মেয়ের পাশে দাঁড়ানোর বদলে তাকে ধর্ষণ করেন বাবাও। এভাবে ঘরে বাইরে চরম নীপিড়নের শিকার হয় আসহায় মেয়েটি। শেষে স্থানীয় এক এনজিওর সহায়তায় সে থানায় যায় এবং বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
মেয়েটি এক বিবৃতিতে জানায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে আমার বাবা প্রথম আমাকে ধর্ষণ করেন। এরপর তিনি আমাকে ভয় দেখিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে কারো কাছে মুখ খুললে তিনি আমাকে মেরে ফেলবেন। আমার স্কুলে যাওয়ার খুব শখ। কিন্তু বাবা আমাকে জোর করে দেহ ব্যবসায় নামাতে চায়।
এ সময় সে পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়ে বলে, ‘দয়া করে আপনারা আমাকে বাঁচান।’
প্রসঙ্গত, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে এক চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যান মেডিকেল ছাত্রী। এ ঘটনার পর দেশটিতে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ কমাতে কঠোর আইন করা হয়। কিন্তু তারপরও দেশটিতে ধর্ষণসহ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।