১৯৯১ সালের এদিনে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত এবং এক কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়। নিহতের সংখ্যা বিচারে স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ’৯১–এর ঘুর্ণিঝড় একটি।
সেদিনের ঘটনার পর যারা বেঁচে আছেন তারা আত্মার শান্তি কামনা করবেন হারিয়ে যাওয়াদের। তবে অনেক পরিবার ছিল যাদের সব সদস্যই সেই ভয়াল রাতে প্রাণ হারিয়েছেন। কেউ হারিয়েছেন অনেক সদস্যকে। সেদিন শুধু মানুষ নয়, গরু ছাগল মহিষ আর মানুষের মৃতদেহে একাকার হয়ে গিয়েছিল উপকূল। কোন রকম ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া মানুষ এবং পশু মাটি গর্ত করে চাপা দেয়া হয়েছিল সেদিন।
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল চট্রগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ৬ মিটার (২০ ফুট ) উচ্চতার জলোচ্ছাস উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত করে এবং এর ফলে প্রায় ১লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়। এদের বেশীরভাগই নিহত হয় চট্টগ্রাম জেলার উপকূল ও দ্বীপসমূহে। সন্দ্বীপ,মহেশখালী , হাতিয়া দ্বীপে নিহতের সংখ্যা সর্বাধিক । এরমধ্যে শুধু সন্দ্বীপে মারা যায় ২৩ হাজার লোক।
ধারণা করা হয় এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রায় ১দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের ( ১৯৯১ সালের মার্কিন ডলার ) ক্ষতি হয়। সাগর ও নদীর উপকূল প্লাবিত হয়। কর্ণফুলী নদীর তীরে কংক্রিটের বাঁধ থাকলেও এটি জলোচ্ছাসে ধ্বংস হয়। চট্রগ্রাম বন্দরের ১০০ টন ওজনের একটি ক্রেন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে স্থানচ্যুত হয় এবং আঘাতের কারণে টুকরো টুকরো অংশে বিভক্ত হয়।
বন্দরে নোঙর করা বিভিন্ন ছোট বড় জাহাজ ,লঞ্চ ও অন্যান্য জলযান নিখোঁজ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয় যার মধ্যে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অনেক যানও ছিল। এছাড়াও প্রায় ১০ লক্ষ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতি বছরের মত বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আজ স্মরণ করবে এই দিনটিকে।