DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

আওয়ামী লীগের সাথে জামায়াত ও হেফাজত সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি?

HeFajot-intro-311x186-300x183দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ বিশ্লেষনঃ  আওয়ামী লীগের সাথে ইসলামী দলগুলোর একটি সমঝোতার সম্পর্ক স্পষ্ট হয়ে উঠলেও দীর্ঘমেয়াদে এর কোন ভবিষ্যৎ দেখছেন না রাজনীতি বিশ্লেষকরা। কারণ,আওয়ামী লীগের মতো একটি দলের সাথে শেষ পর্যন্ত ইসলামভিত্তিক দলগুলোর আস্থার সম্পর্ক অনেকটাই অসম্ভব। তবে, ইসলামী দলগুলোকে আওয়ামী লীগ কতদিন সমঝে চলবে তা অনেকটাই নির্ভর করবে বিএনপির কৌশল ও শক্তি-সামর্থ্যের উপর।

ইসলামী দলগুলোর সাথে বিএনপি সমন্বিতভাবে আন্দোলনে নেমে বদলে দিতে পারে ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ। তাই বিএনপির কাছে এই সুযোগ ভুলেও তুলে দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। তাই, নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্যই আওয়ামী লীগ ও ইসলামভিত্তিক দলগুলো পরস্পর পরস্পরকে সমঝে চলার বিষয়টিকে সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আর, ইসলামী দলগুলো, বিশেষত জামায়াতে ইসলামী এই বাস্তবতা টের পেয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু’পক্ষের সাথেই কুশলী সম্পর্ক বজায় রাখছে। শেষ পর্যন্ত উভয়পক্ষ থেকেই বিভিন্ন ধরণের ফায়দা লুটতেও সক্ষম হচ্ছে ইসলামী দলগুলো। তবে, প্রকাশ্যে ইসলামী দলগুলোর প্রাপ্তি যাই হউক, তাদেরকে শাসনেই রাখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর সুস্পষ্ট উদাহরণ পাওয়া যায়, উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামের তুলনামূলক বেশি সফলতার চিত্রে।

উপজেলা নির্বাচনে সফলতা লাভ করলেও স্বস্তিতে নাই জামায়াতে ইসলাম। সর্বশেষ, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিতে গিয়ে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে থেকে গ্রেফতার হয়েছেন জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান আবু সোলায়মান সরকার সাজা।

এছাড়া, যুদ্ধাপরাধের বিচার ও মৌলবাদের নির্মূলের মতো কর্মসূচীর মতো জামায়াতকে শাসন করার অস্ত্রগুলো আওয়ামী লীগের হাতে রয়েই গেছে। এরই মধ্যে জামায়াতের কাছেও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, ইসলামভিত্তিক দলগুলোকে শাসনের ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতার কথা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হিসেব করে করে সেই অস্ত্রগুলোকে ব্যবহারও করছে।

কিন্তু আওয়ামী লীগের এই হিসাব আর কৌশলের গতিপথ কত দীর্ঘ হবে তা পুরোটাই নির্ভর করছে বিএনপির ওপর। বিএনপি এখনও পর্যন্ত সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকলেও নিকটবর্তী ভবিষ্যৎয়ে বিএনপির পক্ষে আন্দোলন তৈরী করা অনেকটাই অসম্ভব দলটির জন্য।

বিএনপির চেয়ারপার্সন হিসেবে খালেদা জিয়া শারীরিক সমস্যার কারণে অতীতের মতো আন্দোলনের নেতৃত্ব ও উদ্যোগ নিতে পারছেন না। আইনগত জটিলতা, নিজের অবস্থান, দেশের অভ্যন্তরে বিরোধিতার কারণে তারেক রহমানেরও শীঘ্রই দেশে ফেরার সম্ভাবনা নাই। এছাড়া, বিএনপির প্রথম সারির অনেক নেতাই আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলেও বহাল তবিয়তেই থাকতে পারছেন। ফলে, বিএনপির পক্ষে আন্দোলনে নামার আশু কোন সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা।

আবার, বিএনপি ইসলামভিত্তিক দলগুলোকে পায়ে ঠেলে দূরে সরিয়ে দেওয়ার মতো কোন পদক্ষেপও নেবে না। একারণেই, নিকটবর্তী ভবিষ্যৎয়ে নানান সমস্যা সত্ত্বেও বিএনপি বর্তমান সরকারের জন্য একটি প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে হাজির থাকবে। প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে হাজির থাকার কারনে আওয়ামী লীগও নিকটবর্তী ভবিষ্যৎয়ে ইসলামী দলগুলোকে শাসনের মধ্যেই রেখে সমঝে চলতে বাধ্য হবে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!