DMCA.com Protection Status
title="৭

১৪ দলের লাভ-লোকসান

image_88773_0টানা দুই দফা রাষ্ট্রক্ষমতায় ১৪ দল। যদিও গুণলে হিসাব মেলানো যায় না! রাজনৈতিক বাস্তবতার খাতিরেই আওয়ামী লীগ জোটের রাজনীতির দিকে ঝুঁকেছে কিন্তু বড় দল হিসেবে নিজেদের নেতাকর্মীদের রেখে ছোট ছোট শরিককের সন্তুষ্ট করতে পারছে না বা বিষয়টি ততোটা প্রয়োজনও মনে করছে না তারা। হাতে গোনা নেতাকর্মী নিয়ে গঠিত দলগুলোকে বড় প্লাটফর্ম দেয়া হয়েছে এটাই তো অনেক বেশি- এমন মনোভাব দেখাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নীতি নির্ধারকরা। এ নিয়ে শরিক দলগুলোর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
 
এতোদিন ধরে আওয়ামী লীগের পাশে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছে শরিকরা। কিন্তু তাদের যথোপযুক্ত মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এবারের সরকারে মাত্র দুটি দলের নেতাকে মন্ত্রী বানানো হয়েছে। বিগত সরকারেও তারা সুবিধা পেয়েছে। কিন্তু বাকিগুলো এখনো কোনো সুবিধা পায়নি। জোটের কর্মসূচির মঞ্চে তাদের চেয়ার রাখা হয় না, বক্তব্য দিতে দেয়া হয় না। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতিও মিলে না বলে অভিযোগ। যদিও মুখে মুখে অনেকে আদর্শিক অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট গঠন করার কথা বলছেন কিন্তু তাদের চাপা ক্ষোভ ও হতাশা দেখলে দৃশ্যমান মূল্যায়ন পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা স্পষ্ট হয়। তবে তারা আশায় আছেন, প্রধানমন্ত্রী একদিন মুখ তুলে থাকাবেন। তাদের ঝুলিতেও কিছু পড়বে।
 
২০০৫ সালে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জোট গঠনের ডাক এলে ‘বাম বিকল্প শক্তি’ বামে গঠিত জোট ১১ দলের ৭ দল জোটে যোগ দেয়। জোটের শরিক রাশেদ খান মেননের বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী দল, প্রয়াত নুরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের গণতন্ত্রী পার্টি, হাজী আবদুস সামাদের নেতৃত্বাধীন গণআজাদী লীগ, অজয় রায়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট কেন্দ্র, জাকির হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি এবং ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটে শরিক হয়। সেসময় ঘোষণা করা হয়, বামপন্থি ১১ দল, বর্তমান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর জাসদ, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদর নেতৃত্বাধীন ন্যাপ এবং আওয়ামী লীগ মিলে ১৪ দল গঠিত হয়েছে।
 
২৩ দফার ভিত্তিতে ২০০৫ সালে ১১ দলের ৭ দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করলেও দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আবার গণফোরাম ও জাকির হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি থেকে নুরুল ইসলাম ও আবু তাহেরের নেতৃত্বে একটি অংশ আবার জোট থেকে বেরিয়ে যায়। ওয়ার্কার্স পার্টি থেকেও বেরিয়ে যান দলের পলিটব্যুরো সদস্য হায়দার আকবর খান রনোর নেতৃত্বে একটি অংশ। 
 
আওয়ামী লীগের সঙ্গে তথাকথিত ১৪ দলে এখন রয়েছে- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশ গণতন্ত্রী পার্টি, গণ-আজাদী লীগ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ- রেজাউর রশিদ খান), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।
 
বিগত সরকারে প্রথমে সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া মন্ত্রিত্ব পান। শেষ সময়ে এসে মন্ত্রী হয়েছেন জাসদের হাসানুল হক ইনু আর ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন। তবে বর্তমান সরকারে ইনু ও মেননের মন্ত্রিত্ব টিকলেও ঠাঁই পাননি দিলীপ বড়ুয়া। এছাড়া শরিকদের প্রাপ্তিতে যোগ হয়েছেন জাতীয় পার্টির (জেপি) আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। বাকিদের ভাগ্যে গতবারেও শিকে ছিঁড়েনি এবারও তাদের প্রতীক্ষার সমাপ্তি হয়নি। অনেক আশা থাকলেও মন্ত্রিত্ব তো দূরের কথা কোনো মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বা ছোট খাটো কোনো পদও দেয়া হয়নি তাদের।
 
শরিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশ গণতন্ত্রী পার্টি, গণ-আজাদী লীগ, বাংলাদশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ- রেজাউর রশিদ খান), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এবং পরে যোগ দেয়া জাতীয় পার্টি (জেপি) ও তরীকত ফেডারেশনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হচ্ছে। তবে তারা এখনো আশা ছাড়েননি। আর সেকারণেই প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না: যদি জোট নেত্রী ক্ষুব্ধ হন! তবে তাদের সক্রিয়তায় স্পষ্ট ভাটা পড়েছে।  অনেককেই এখন ১৪ দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যায় না। কেউ কেউ সংশ্লিষ্টতা প্রমাণের জন্য কর্মসূচিতে যোগ দিলেও সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার ক্ষোভ পুষে রেখেছেন মনে।
 
জোটের অনেক নেতার অভিযোগ, ১৪ দলের কোনো কর্মসূচিতে তাদের বসার চেয়ার রাখা হয় না। বক্তব্য, বিবৃতিতেও তাদের কোনো স্থান নেই। আওয়ামী লীগ নিজেদের মতো হুটহাট বৈঠক ডাকে। বৈঠকে প্রধান্য থাকে তাদেরই। আর সংবাদ সম্মেলনের সময়ও তাদের বসার জায়গা দেয়া হয় না।
 
এছাড়া সম্প্রতি শেষ হওয়া উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘একাই দখলের’ নীতি শরিকদের হতাশ করেছে। জোটে নতুন যুক্ত হওয়া জাতীয় পার্টি (জেপি) ও তরীকত ফেডারেশন দশম সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসনে ছাড় পেলেও গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, গণআজাদী লীগ, ন্যাপ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ও বাসদকে আসন দেয়া হয়নি। নির্বাচন-পরবর্তী সরকার গঠনের বেলায়ও মূল্যায়ন করা হয়েছে শুধু ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও জাতীয় পার্টির (জেপি)। 
 
জোট নেতারা বলছেন, জনবল কম থাকলেও আমরা ১৪ দলে আছি, আওয়ামী লীগকে বিভিন্নভাবে সাহয্য করছি। বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই সংগ্রামে এগিয়ে আছি। ইতোমধ্যে ২৬, ২৭ ও ২৮ এপ্রিল ১৪ দল খুলনা, ঢাকার পাশে সাভার ও ময়মনসিংহে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, স্থিতিশীলতা, শান্তি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ বাধাগ্রস্ত এবং বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতীয় গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে সমাবেশে গেছি। কিন্তু আমাদের বসার জন্য চেয়ার রাখা হয়নি, বক্তব্য দেয়ার সুযোগও কম দিয়েছে।
 
অনেকে বেশ কঠোর ভাষায় বলেন, আওয়ামী লীগ এখন একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করছে। স্বাধীনতার পরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল কায়েমের প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান আওয়ামী লীগের সেই ধারাবাহিকতা চলছে বলেও অনেকের অভিযোগ। আওয়ামী লীগ বরাবরই বামপন্থিদের ঘায়েল করার চেষ্টা করেছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
 
তবে শরিকদের তেমন গুরুত্ব না দেয়ার পেছনে আওয়ামী লীগের যুক্তি আছে। নবম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। দশমেও একই অবস্থা। সুতরাং তারা ছোট শরিক দলগুলোকে উপেক্ষা করতেই পারে! শরিকরাই বরং আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে ক্ষমতার স্বাদ পেতে চাইছে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ।
 
শরিক দলগুলোর সাংগঠনিক দুর্বলতাও রীতিমতো লজ্জাজনক। জাসদের হাসানুল হক ইনু, শিরিন আক্তার, মঈনউদ্দিন খান বাদল, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, ফজলে হোসেন বাদশা দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের করুণায় নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৪ দলের বেশিরভাগেরই সাংগঠনিক ভিত্তি অত্যন্ত নড়বড়ে। 
 
১৯৯৬ সালে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের অধীনে নির্বাচন ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ১১ দল (বাম দলগুলো এ জোটেরই অংশ) আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বলয়ের বাইরে থেকে নির্বাচন করে। কিন্তু দুটি নির্বাচনের কোনোটিতেই একটিও আসন পায়নি।
 
এই দুর্বলতার কারণেই ১৪ দলের নেতাদের এসব অভিযোগের পাত্তা দিচ্ছেন না আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলছেন, ১৪ দলের নেতারা সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। তাদের মধ্যে অনেককেই মন্ত্রিত্ব দেয়া হয়েছে। অনেককে এমপি হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয় নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। জোটে যোগ দেয়ার আগে তাদের লোকজন ছিল না বা কথা বলার জায়গাও ছিল না। এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসার কারণেই সেসব পেয়েছে। এই শরিকদের মধ্যে অনেকেই এখন বড় নেতা। বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারেন। 
 
আওয়ামী লীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘১৪ দলের নেতাদের কী সুবিধা দেয়া হয়নি? তাদের এমপি হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিত্ব দেয়া হয়েছে। তাও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে। জোটের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ্য আসনে বসানো হয়। বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। ১৪ দলে না এলে তারা কোনোদিনই এ সুযোগ পেত না। তাদের দলে লোক নেই। শুধু আছে বড় বড় বুলি। বরং তাদের কারণে আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী নেতা সুযোগ পাচ্ছে না। এ কথা আমরা বলতে পারি, এই সরকারে আওয়ামী লীগের বাইরে যারা আছে তাদের জন্য আমরা অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছি।’
 
বঞ্চিত হওয়ার কারণে হতাশা থাকতে পারে- এমন কথা স্বীকার করেছেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘কারো কারো মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হতে পারে। অনেক শরিকই কিছু পায়নি। তবে এ নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আশা করি, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়গুলো সমাধান করবেন।’
 
১৪  দলের যারা সরকারে নেই তাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা সুযোগ দেয়া হয় না বিষয়টি সত্য কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি এমন নয়। যারা সরকারের মন্ত্রী রয়েছেন তারাতো দেখা করেন। প্রয়োজনে বাকি শরিকরাও দেখা করেন।’
 
গত সরকারে আপনি শিল্পমন্ত্রী ছিলেন এবার কিছুই পেলেন না বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘এটাকে আমি রাজনৈতিকভাবে দেখছি। ওনার ইচ্ছে হয়নি তাই মন্ত্রী বানাননি। আমি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থাশীল।’  
 
বাংলাদেশের গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি নুরুর রহমান সেলিম ক্ষোভের সঙ্গেই বললেন, ‘মূলত আমরা ১৪ দলে গিয়ে ছিলাম ২৩ দফার ভিত্তিতে। কিন্তু সেসব বাস্তবায়ন হচ্ছে খুব ধীর গতিতে। আমরা আশা করবো, এই গতি আরো যাতে বৃদ্ধি পায়।’
 
বঞ্চিত হওয়ার কারণে ১৪ দলের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্ষোভতো দেখা দিতেই পারে। কারণ আমরা তাদের সঙ্গে যেসব কন্ডিশনের ভিত্তিতে গিয়েছিলাম তা হয়নি। এমনকি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করারও সুযোগ দেয়া হয় না।’
 
১৪ দলের মধ্যে জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি তো অনেক সুবিধা নিচ্ছে…। সেলিম বলেন, ‘আমরাতো এমপি, মন্ত্রী  বা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য ১৪ দলে যাইনি। তবে এমন কিছু হলে তা খারাপ কিছু নয়। আমরা চাই তারা আমাদের যথাযথ মূল্যায়ন করুক।’
 
সবচেয়ে ক্ষোভ বেশি বালাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) আহ্ববায়ক রেজাউর রশিদ খানের। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল হলে যা হয় আওয়ামী লীগ তা-ই করছে। তবে আমাদের ১৪ দলে যাওয়ার কারণ ছিল মূলত ঐক্যবদ্ধভাবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, জঙ্গিমুক্ত, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবি। কিন্তু এসব দাবি এখন ধীরে ধীরে মলিন হতে বসেছে।’
 
শরিকদের মধ্যে কোনো ক্ষোভ আছে কি না- জানতে চাইলে বলেন, ‘ক্ষোভের কিছু কারণ দেখা দিয়েছে। তবে এটা বড় ধরনের কিছু না। আশা করি পরবর্তীকালে আলোচনা করলেই সমাধান হয়ে যাবে। এ বিষয়গুলো সমাধান হয়ে যেত যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমরা আলোচনা করতে পারতাম।’
 
তাহলে কি আপনাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেখা হয় না? রেজাউর রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি এমন না। তবে বড় কোনো মিটিং ছাড়া আমাদের দেখার সুযোগ হয় না। আর ওই সময়ে আলোচনার কোনো সুযোগ থাকে না। তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে আগামী মে মাসের মধ্যেই আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবো। কারণ আমরা সরকারকে যেমন আন্দোলন সংগ্রামে সহযোগিতা করব। পাশাপাশি আমাদেরও কিছু দিতে হবে।’
 
আপনাদের মধ্যে দুই দল ছাড়া আওয়ামী লীগ আর কাউকে কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি কেন জানতে চাইলে রেজাউর রশিদ খান বলেন, ‘দেশের কোনো শীর্ষস্থানীয় পদে সবাই বসতে চায়। এ আশা আমাদেরও আছে। আশা করি সরকার ও আওয়ামী লীগ মূল্যায়ন করবে।’
 
এ বিষয়ে ১৪ দলের মূখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহম্মদ নাসিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
 
তবে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও ১৪ দলের দপ্তর সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস শরিক দলগুলোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘১৪ দলের শরিকদের মধ্যে কোনো ক্ষোভ নেই। যদি এমন কোনো কথা কেউ বলে থাকে তবে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
 
শরিক নেতাদের অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের দেখা করার সুযোগ দেয়া হয় না- এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘প্রতিমাসে অন্তত ৪ থেকে ৫ বার তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিটি বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করা হয়।’ তবে ১৪ দল একটি আদর্শের ওপর গঠিত। কোনো ব্যক্তি বা বৈষয়িক কিছু নিয়ে গঠিত হয়নি। ১৪ দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে একটি প্রতিষ্ঠান। এই জোট কখনও ভাঙবে না বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।
 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!