যুক্তরাষ্ট্র বলছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতিতে বৃহৎ প্রতিবেশি ভারতের ‘মারাত্মক প্রভাব’ রয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম ২০১৩’ প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে আন্তর্দেশীয় হুমকির পথ উন্মুক্ত করেছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি কংগ্রেসে জমা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট।
প্রতিবেদনে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার প্রসঙ্গে আলোকপাত করতে গিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতিতে এ অঞ্চলের মূল শক্তি, বিশেষ করে ভারতের ‘মারাত্মক প্রভাব’ রয়েছে।
প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাস মোকাবেলায় নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ, সন্ত্রাসীদের নিরাপদ স্থান এবং বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস মোকবেলায় বাংলাদেশকে ‘প্রভাবশালী অংশীদার’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, দেশটি বৈশ্বিক সন্ত্রাস মোকাবেলায় নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসীদের এ দেশটিতে কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে ২০১৩ সালে বাংলাদেশে বড় ধরনের কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেনি।
বাংলাদেশের সীমান্ত এবং স্থল, নৌ ও বিমানবন্দর হয়ে প্রবেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরো কড়া করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা নিয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও আঞ্চলিক নীতির বেশিরভাগই এ অঞ্চলের মূল শক্তি, বিশেষ করে ভারতের দ্বারা ‘প্রচন্ডভাবে’ প্রভাবিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং প্রতিশ্রুতিরই’ প্রতিফলন ঘটেছে।
এতে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং আগ্রগতিগুলোও তুলে ধরা হয়।
বিশেষ করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আইনের বাস্তবায়ন এবং সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া সহিংসত ধর্মীয় উগ্রতার বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে নারীদের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধাও বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ২২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা চুক্তির কারণে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কও উন্নত হয়েছে।