গলাচিপায় কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় নারী-শিশুসহ আট মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সাঁতরে তীরে উঠেছে অন্তত ১৫ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ২৫ জন যাত্রী।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ইছাদী মিয়ার বাড়ির মোড় রামনাবাদ নদীতে এমভি শাথিল-১ নামে লঞ্চটি ডুবে যায়। রাত ৮টা পর্যন্ত আট জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।
উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া কলাগাছিয়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ পরির্দশক (এসআই) হালিম খন্দকার জানান, আরো অন্তত ২৫ যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে।
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য খলিলুর রহমান জানান, লঞ্চডুবির পর অন্তত ১৫ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়। বাকিরা নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধারকারীরা নদী থেকে আট জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। নৌকা ও ট্রলার নিয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে স্থানীয় লোকজন।
লঞ্চমালিক শাহজাহান খানের ছেলে শিপলু খান জানান, দুপুর ১২টার দিকে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে গলাচিপা থেকে পটুয়াখালী আসছিল এমভি শাথিল-১। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে লঞ্চটি কলাগাছিয়া এলাকায় পৌঁছালে রামনাবাদ নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে। এসময় প্রবল বাতাসে লঞ্চটি নদীতে ডুবে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে লঞ্চটি গলাচিপা থেকে ইছাদি মিয়া বাড়ির মোড়ে পৌঁছলে হঠাৎ কালবৈশাখীর কবলে পড়ে ডুবে যায়। পরে স্থানীয় জনতা ও পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। তারা পাঁচ নারী, এক পুরুষ ও দুই শিশুসহ আট যাত্রীর লাশ উদ্ধার করে।
কলাগাছিয়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) হালিম খন্দকার বলেন, উদ্ধার হওয়া মতৃদেহের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় জানা গেছে। লাশের সুরাতহাল চলছে। তবে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
পটুয়াখালী বিআইডব্লিউইটিএ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চটি উদ্ধারের জন্য উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা বরিশাল থেকে রওনা হয়েছে।
গলাচিপা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, ‘গলাচিপা উপজেলা প্রশাসন উদ্ধার তৎপরতায় চালিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু নিখোঁজ যাত্রী রয়েছে তাই উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজে যথেষ্ট সহায়তা করছে।’
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার বলেন, ‘উদ্ধার কাজে অংশ নেয়ার জন্য পটুয়াখালী থেকে দমকল কর্মীদের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। আমি দুর্ঘটনা স্থলে রয়েছি।’
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদেরচেয়ারম্যান মো. দুলাল মিয়া জানান, এমভি শাতিল ডুবে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন ট্রলার ও নৌকা নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। যাত্রীদের কেউ কেউ সাঁতরে তীরে উঠে জীবন রক্ষা করে। এর মধ্যে আটজনের মৃতদেহ পাওয়া গেলেও বাকিদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা যায়নি।