নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডার ঘটনায় র্যাব-১১’র অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ সহ তিন কর্মকর্তাকে তরিঘরি করে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনের অপহরণ ও খুনের ঘটনায় এই সিদ্ধান্ত আসে।
নিহত প্যানেল মেয়র নজরুলের পরিবারের লোকজনের সরাসরি অভিযোগে র্যাব-১১’র অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ নাম উঠে আসলে তাকে তৎক্ষনাৎ প্রথমে নারায়নগন্জ থেকে প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনীতে ফেরৎ পাঠানো হয়।উল্লেখ্য এই তারেক সাঈদ আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী মোফাজ্জল চৌধুরী মায়ার জামাতা হওয়ায় এই বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
মঙ্গলবার সেনা সদর দপ্তর ও নৌ-বাহিনী সদর দপ্তর থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয় বলেও দুই বাহিনী সূত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে। অবসরে যাওয়া অপর দুই কর্মকর্তা হলেন সেনাবাহিনীর মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এমএম রানা। অবসরের পর তারা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলেও জানা গেছে।
সেনা কর্মকর্তারা আপাতত নিজ বাসায়ই থাকতে পারবেন। তবে দোষী প্রমাণিত হলে সব অভিযুক্তকে ফৌজদারি আদালতের মুখোমুখি হতে হবে। উল্লেখ্য, ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন।
এর তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যায় তাদের লাশ ভেসে ওঠে। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করে নজরুলের পরিবার।
গত রোববার নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে র্যাবের তিন কর্মকর্তা ওই সাতজনকে অপহরণ ও খুন করেছেন। ইতোমধ্যে এ ঘটনার সার্বিক তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইভাবে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পাশাপাশি ওই ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দিয়ে মামলা তদন্ত করতেও নির্দেশ দেন আদালত।
র্যাবের সাবেক বা বর্তমান কোনো সদস্যের সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, সে বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত করতে র্যাবের মহাপরিচালককেও (ডিজি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। র্যাবের পক্ষ থেকেও এ ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার সদস্যের কমিটির প্রধান হলেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আফতাব উদ্দিন আহমেদ।