স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালোবাসার এক মধুর সম্পর্ক এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু যখন এই সম্পর্কে তিক্ততা চলে আসে তখনই এই পবিত্র সম্পর্কের মাঝে ফাটল ধরে। ভেঙে যায় তাদের বহুদিনের সংসার। আমাদের দেশে বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়টি অহরহ ঘটছে। তবে বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে ডিভোর্সী নারীরা যখন স্বামীর কাছ থেকে দূরে চলে যান, নিজের জীবনকে নতুন করে উপলব্ধি করতে পারেন। তখন এমন কিছু বিষয় তারা অনুভব করেন যেগুলো তাদের ডিভোর্সের আগে বুঝে ওঠা হয় না।
১. সম্পর্কটি মধুর ছিল না : একজন নারী বিবাহ নামক যে সম্পর্কে এতদিন আবদ্ধ ছিলেন ডিভোর্সের পরে বোঝা যায় সম্পর্কটি কোনোমতেই রোমান্টিক বা মধুর ছিল না। শুধু সংসার করতে হবে বলে সে সম্পর্ক করে গেছে কিন্তু অনুভবে, বিশ্বাসে, ভালোবাসায় কখনই মানুষটি তার আপন ছিল না। তাদের মাঝে কোনো আকর্ষণ ছিল না। স্বামী শুধুমাত্র তার অফিস আর বন্ধুবান্ধব নিয়েই ব্যস্ত ছিল স্ত্রীর দিকে তার এতটুকুও মনোযোগ ছিল না। এক কথায় সম্পর্কটির মাঝে কোনোই মাধুর্যতা ছিল না।
২. তৃতীয় ব্যক্তির সমতুল্য : একজন নারী ডিভোর্সী হওয়ার পরে বুঝতে পারেন তিনি তার সংসারে একজন তৃতীয় পক্ষের মতই ছিলেন। তার হয়তো সাংসারিক অনেক দায়িত্ব ছিল কিন্তু এই দায়িত্ব যেকোনো তৃতীয় ব্যক্তি এসেও পালন করতে পারত। এর জন্য তার কোনো প্রয়োজন ছিল না। সংসারটিতে তিনি একজন স্ত্রী হিসেবে নয় একজন গৃহিনী হিসেবেই বিবেচ্য ছিলেন। সংসারের সমস্ত কাজ তিনি করে গেছেন যা বাড়ির কাজের লোকটিও করে যেতে পারত কিন্তু স্বামী স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসার সম্পর্কটি অনুপস্থিত ছিল।
৩. আবেগ প্রকাশে সচেতন হওয়া উচিৎ ছিল : এমন অনেকেই আছেন যারা তার স্বামীকে সর্বোচ্চ দিয়ে ভালোবেসে গেছেন। স্বামীর ভালোর জন্য নিজের স্বাধীনতা পর্যন্ত বিসর্জন দেন। নিজেকে পুরোপুরিভাবে স্বামীর ভালোবাসায় আত্মোৎসর্গ করেন। তারা তাদের আবেগটাকে দমন করতে পারেন না। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে নিজের ব্যক্তিত্ব লোপ করে স্বামীর কাছে কান্নাকাটি করেন। মনের সব কথা স্বামীর কাছে সরল মনে বলে দেন। এ থেকে স্বামীরা স্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন। তাদের কাছে স্ত্রীকে নতুনভাবে জানার আর কিছু থাকে না। একজন ডিভোর্সী নারী এই বিষয়গুলো খুব সহজেই উপলব্ধি করতে পারেন। বুঝতে পারেন তার আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা না থাকায় তার উপরে স্বামীর আকর্ষণ কমে গেছে। এর ফলেই ডিভোর্সের মত ঘটনাটি ঘটেছে।
৪. সব বিষয়েই পারদর্শী হওয়া উচিৎ ছিল : এমন অনেক বিষয়ই আছে হয়ত আমরা অনেকেই পারি না। কিন্তু না পারাকে কখনই স্বীকার করা উচিৎ না বলে মনে করেন একজন ডিভোর্সী নারী। তিরি বুঝতে পারেন নিজের অপারগতাকে স্বামীর কাছে প্রকাশ করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এজন্য তিনি ধ্রুব সত্যটাকে উপলব্ধি করেন ডিভোর্সের পর।
৫. সব পুরাতনই আবার নতুন হয়ে আসে : আমরা সকলেই হয়ত জানি সব পুরাতনই একসময় আমাদেও কাছে নতুন মোহের তৈরি করে। কিন্তু সেটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে কতটা যুক্তিযুক্ত? একটি সম্পর্কের মোহ শেষ হলে তা পুরাতন হয়ে যায়। তার প্রতি আর কোনো আসক্তিই থাকে না। কিন্তু একমাত্র একজন ডিভোর্সী নারীই উপলব্ধি করতে পারেন যে একটি পুরাতন সম্পর্কের আবার নতুন মোহ তৈরি হতে পারে। নতুনভাবেই সেই ডিভোর্সীকে হয়ত প্রাক্তন স্বামী কাছে পেতে চান। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তা কতটা যুক্তিযুক্ত তাই ভাবার বিষয়।