সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে নিজের যৌন সম্পর্ক নিয়ে প্রায় ১৫ বছর পর ফের মুখ খুললেন মনিকা লিউনস্কি। আর তার এ মুখ খোলার মধ্য দিয়ে বিশ্বজোড়া মনিকা-ক্লিনটন যৌন কেলেঙ্কারি বিতর্ক ফের মাথাচাড়া দিল।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে এতদিন মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন হোয়াইট হাউসের সাবেক এ কর্মচারী।
এতদিন পর তিনি জানিয়েছেন, দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই ক্লিনটন তার সঙ্গে যৌনকর্ম করেছেন। তবে তিনি তাতে বাধা দেননি। বরং সম্মতিই দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ওই ঘটনার পর চুপ করে থাকায় আমার বদনাম হয়েছে। সেই নীল রঙের স্কার্টকে ঘিরে যে বদনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল, এবার তার অবসান ঘটাতে চাই।
সম্প্রতি ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনে তিনি এ নিয়ে প্রথমবারের মতো নিজে লিখেছেন। ৮ মে সংখ্যাটি অনলাইনে পাওয়া যাবে।
ওই লেখায় তিনি দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট তাকে ধর্ষণ করেননি। দু’জনের সম্মতিতেই তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। তবে ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর তাকে নানা অবমাননা সহ্য করতে হয়।
ক্লিনটনের সঙ্গে তার ওই সম্পর্ক নিয়ে তিনি গভীরভাবে অনুতপ্ত বলেও জানিয়েছেন ৪০ বছরের মনিকা।
তিনি আরও লেখেন, তখন ক্লিনটনের চারপাশের লোকজন তাকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেন। আর প্রেসিডেন্টের বিরোধীরা তাকে রাজনীতির গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।
মনিকা নিজেকে ইন্টারনেট যুগের প্রথম ‘বলির পাঁঠা’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তার দাবি, অন্যদের এ বিষয়ে সচেতন করে তুলতেই তিনি এ নিয়ে মুখ খুলেছেন।
তিনি এমন এক সময় ক্লিনটনের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কের পুরনো ঘটনা নিয়ে সরব হলেন, যখন সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা চিন্তা করছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
তবে রিপাবলিকান দলের নেতারা বলছেন, স্বামীর যৌন কেলেঙ্কারী নিয়ে হিলারিকে তারা বিদ্ধ করবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে নব্বই দশকে এই কেলেঙ্কারী নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। মনিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করায় ক্লিনটন ইমপিচমেন্টের মুখোমুখিও হয়েছিলেন।
এর আগেও ক্লিনটনের সঙ্গে নিজের যৌন সম্পর্ক নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে নীরবতা ভেঙেছেন। ১৯৯৯ সালে তিনি বারবারা ওয়ালেটের সঙ্গে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। একই বছর তাকে নিয়ে বই লেখেন লেখক এন্ড্রু মর্টন। সে বইয়ের নাম ছিল ‘মানিকা স্টোরি’।
ভ্যানিটি ফেয়ারে লেখায় তিনি আরো বলেন, অবশ্যই আমার বস (ক্লিনটন) আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু আমি এ সম্পর্ক নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি করতে চাইনি। যদিও দুজনের সম্মতিতেই সম্পর্ক হয়েছিল। তবে এ ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর আমাকে নানাভাবে নাজেহাল করা হয়। যেন আমিই একা অপরাধী। প্রেসিডেন্ট অনেক ক্ষমতাশালী। তাকে রক্ষা করতে আমাকেই বলির পাঠা করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ২২ বছরের মনিকা লিউনস্কির সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সম্পর্কের খবর জানাজানি হওয়ার পর তোপের মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট। এ ঘটনায় ১৯৯৮ সালে মার্কিন সিনেটে ক্লিনটনের ইমপিচমেন্ট হয়।