নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠায় দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারেন এজন্য সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে উপস্থিত হননি। এমনকি এদিন তিনি সচিবালয়ে তার কার্যালয়েও আসেননি। মন্ত্রী বর্তমানে বাসায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত শুক্রবার ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে সেভেন মার্ডার মামলায় অভিযুক্তদের সঙ্গে আমার পরিবারের কোনো সদস্যের কোনো যোগাযোগ বা ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল না।’
মায়া বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আমার পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। যা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে এবং আমার পরিবারের সম্মানহানি করেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত কমিটি তদন্ত কাজ শুরু করেছে। এ তদন্ত কাজ যেন কোনোভাবেই প্রভাবিত না হয়, সেজন্য আমি কোনো রকম মন্তব্য করা থেকে বিরত আছি।’
তদন্তে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে আশা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘নিহতদের পরিবারের মতো আমিও প্রকৃত অপরাধীদের আইনানুগ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।’ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর শোক ও নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনাও জানান সরকারের এই মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় র্যাবের তিন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরা হলেন- মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ, সেনাবাহিনীর মেজর আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানা।
এদের মধ্যে তারেক সাঈদ র্যাব-১১ এর অধিনায়ক ছিলেন। এছাড়া বাকি এই দুজনও নারায়ণগঞ্জে র্যাব-১১ এ কর্মরত ছিলেন। সাতজনকে অপহরণের পর তাদের নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে স্ব স্ব বিভাগে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৯৬ সালেও তার ছেলে দীপু চৌধুরীর কার্মকাণ্ডের বিপাকে পড়েছিলেন মায়া। ওই সময় রাজধানীর উত্তরায় ঠিকাদার তফাদার হত্যা মামলার আসামি ছিলেন দীপু। বিষয়টি নেয় সারা দেশ সমালোচনার ঝড় উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মায়া বলেন, ‘হয় আপনি মন্ত্রিত্ব ছাড়েন অথবা ছেলেকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন।’ পরে পলাতক দীপুকে সিলেট থেকে ধরে এনে আত্মসমর্পণ করান মায়া। পরে অবশ্য মামলা থেকে খালাস পান দীপু।