DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

কী অদ্ভুত ঘটনা, সেরা গায়িকার মুখে ‘দাড়ি’!

ap_eurovisionলাস্যময়ী তরুণীর মুখে এক-গাল দাড়ি! আপাত-বৈপরিত্যের এ হেন ছবি দেখা গিয়েছে এ বছরের ইউরোভিশন সঙ্গীত প্রতিযোগিতায়, যখন গানের ছোঁয়ায় মঞ্চ মাত করলেন অস্ট্রিয়ার শিল্পী কঞ্চিতা উর্স্ট। রূপান্তরকামীর প্রচলিত সব ধ্যান-ধারণা চুরমার করে দিয়েছেন অস্ট্রিয়ার সঙ্গীত শিল্পী কঞ্চিতা। বেশ-ভূষায় তিনি পুরো দস্তুর নারী।

মুখের গড়ন, চেহারার আদল, মানসিকতা ও বাচন ভঙ্গি-সব কিছুতেই তিনি মহিলা। অথচ সুন্দর মুখ ছেয়ে রয়েছে ঘন দাড়িতে। সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ছোট থেকেই মনে করতেন পুরুষের শরীরে তিনি এক বন্দি নারী। সেই কারণে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে পাল্টাতে শুরু করেন জন্মসূত্রে টম নিউওয়র্থ।

ক্রমে মহিলা হিসেবেই সমাজে গণ্য হন তিনি। লিঙ্গ রূপান্তর করার ঘটনা আজ আর নতুন নয়। পুরুষ হয়ে জন্মালেও পরবর্তীকালে স্বেচ্ছায় লিঙ্গ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু এ পথে অত্যন্ত ব্যতিক্রমী। কঞ্চিতা। পোশাক-প্রসাধনে নারী হয়ে উঠলেও গালে ঘন দাড়ি রাখার বাতিক ছাড়েন না গায়িকা। ফলে মঞ্চে তিনি প্রবেশ করলেই চমকে ওঠেন শ্রোতারা। চেহারার এই বৈপরিত্যের জেরে অবশ্য ধেয়ে আসে সমালোচনার ঝড়।

conchita-wurstইউরোভিশন প্রতিযোগিতায় তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে রাশিয়ার সমকাম-বিরোধীরা। এক কাঠি ওপরে গিয়ে ফাইনালের আগে রুশ রাজনীতিক ভিতালি মিলোনভ তাকে 'বিকৃতকাম' বলতেও ছাড়েন না। এর আগে আর্মেনিয়ার শিল্পী আরাম এমপিথ্রি-ও অবশ্য মন্তব্য করেছিলেন, 'কঞ্চিতার উচিত সে ছেলে না মেয়ে, সে ব্যাপারে ফয়সালা করা।' জবাবে অস্ট্রিয় কণ্ঠশিল্পী জানান, তিনি নিজেকে মেয়ে প্রতিপন্ন করার জন্য ব্যাকুল নন। বরং একজন প্রতিভাবান শিল্পী হিসেবেই নিজেকে প্রকাশ করতে চান।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে অস্ট্রিয়ার জাতীয় টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে প্রথম মুখ দেখান কঞ্চিতা। তখন অবশ্য তিনি পুরুষ হিসেবেই পেশ হন। এর ৪ বছর পর তিনি নয়া চেহারায় টেলি ভিশনে উপস্থিত হন। কারণ হিসেবে জানান, পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এই পরিচয় তৈরি করেছেন। নিন্দুকদের ব্যাখ্যা, জনপ্রিয়তা অর্জন করতেই এই রূপান্তর। কঞ্চিতা নিজে অবশ্য বলেন, 'আমি একজন শিল্পী, যে সুন্দর সাজ-পোশাক ব্যবহার করি আর দারুণ চুল ও দাড়ি রাখি।'

যাবতীয় বিতর্কে জল ঢেলে শেষ পর্যন্ত ২৯০ পয়েন্ট জিতে ইউরোভিশন ২০১৪ প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা লাভ করেছেন কঞ্চিতা। তার গলার জাদুতে পাগল হয়েছেন শ্রোতারা। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছেছে তার গান 'রাইজ লাইক আ ফিনিক্স'। পুরস্কার বিতরণী ভাষণে তিনি জানান, 'শান্তি ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সবাইকে এই রাত টা উত্সর্গ করলাম। তুমি জানো আসলে তুমি কে। আমরাই সংহতি আর আমাদের থামানো যাবে না।' 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!