DMCA.com Protection Status
title=""

সেভেন মার্ডার কেসঃ র‌্যাবের কার্যক্রমে হাইকোর্টের অসন্তোষ প্রকাশ

High-Court_0নারায়ণগঞ্জে ৭ জনকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনা পরবর্তী র‌্যাবের কার্যক্রম এবং তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল প্রক্রিয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। নারায়ণগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে র‌্যাবের কোনো সদস্য জড়িত আছে কিনা, সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার পর র‌্যাবের প্রতি এই অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।

সাতটি কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করে তা পড়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেলকে আবারও র‌্যাব ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের দেওয়া অগ্রগতি তদন্ত প্রতিবেদনটি পড়তে বলেন। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পড়লাম তো। আদালত বলেন, পাঠ করা হয়েছে। কিন্তু আলোচনা হয়নি। আদালত বলেন, অন্যান্য প্রতিবেদনগুলো অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে দাখিল করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।

কিন্তু র‌্যাবের ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতিবেদনে তা বলা হয়নি। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তাদের মানসিকতার ব্যাপারে আমি কী বলব। উনারা এটা ঠিক করেননি। এ সময় র‌্যাবকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, মানসিকতা দেখলেই বুঝা যায়, তারা কতটুকু কাজ করবে। তাদের প্রতিবেদনে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে পাঠাতে হবে এমন কিছু উল্লেখ নেই।

প্রতিবেদনটি আদালতে কীভাবে পাঠালো, তাহলে কী একটা খামে ভরে পাঠালো। আদালত এ সময় বলেন, ‘‘গত ১২ মে প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘নূর হোসেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সে এখন কলকাতায় আছে। হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর নূর কলকাতায় পালিয়ে গেছে।

তাকে গ্রেফতার করতে পারলেই সব রহস্য উন্মোচিত হবে। তাকে কলকাতা থেকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।’ আমরা আদেশের মাধ্যমে নিষেধ করেছিলাম, র‌্যাব যেন এ মামলার তদন্ত না করে। তাহলে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক যে বলেছেন, নূরকে গ্রেফতার করলেই রহস্য উন্মোচন হবে, তাকে রহস্য উন্মোচনের দায়িত্ব দিয়েছেন কে? এ ছাড়া বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার উনি কে।

’’ আদালত বলেন, জিয়াউল আহসান ওই সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার এ মন্তব্যের মাধ্যমে শহীদুল ইসলামকে ইনডিরেক্টলি থ্রেট দেওয়া হয়েছে। যিনি সাহস নিয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। তাকে আসামি বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তাকে কথা বলতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন আদালত।

এরপর আদালত বলেন, র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান যে মন্তব্য করেছেন তা আদালত অবমাননার শামিল। এ সময় আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, আমরা কী তার বিরুদ্ধে আদেশ দিব, নাকি আপনি বিষয়টি ঠিক করতে পারবেন। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, না, আদেশ দেওয়ার দরকার নেই, আমি বিষয়টি ঠিক করতে পারব। আমাকে বলার অর্থই হল আদেশ দেওয়া।

এরপর আদালত বলেন, র‌্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য ওই এলাকায় (নারায়ণগঞ্জে) র‌্যাবের কার্যক্রম বন্ধ রাখলে সমস্যা কী। মানুষজন নির্ভয়ে সাক্ষ্য দিতে আসুক। গণশুনানিতে এসে মানুষ জবানবন্দি দিক। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে আদালত আবারও বলেন, আমরা এ বিষয়ে আদেশ দিতে পারি।

কিন্তু আপনার সঙ্গে যেহেতু নির্বাহী বিভাগের কিছুটা যোগাযোগ হয়, তাই আপনি এ বিষয়ে কথা বলবেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ঠিক আছে আমি এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলব। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আগামী ৪ জুন এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করে আদালত মুলতবি করেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!