DMCA.com Protection Status
title=""

শেখ হাসিনার প্রশ্নবাণে নাজেহাল এ্যাডভোকেট মতিন খসরু

image_91141_0আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরুর তৎপরতা নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতিতে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের শোচনীয় হার, নারায়ণগঞ্জ ইস্যুতে রিট এবং ড. কামাল হোসেনের শুনানিতে তিন র্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ ইত্যাদি ইস্যুতে নানা প্রশ্নে নেত্রীর কাছে নাজেহাল হয়েছেন তিনি।



শেষ পর্যন্ত তাকে সতর্ক করে দিয়ে চরম বিরক্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তুমি দলের কীসের আইন বিষয়ক সম্পাদক?'



বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে।



ড. কামাল হোসেন নারায়ণগঞ্জ ইস্যুতে কোনো এফআইআর বা জিডি ছাড়াই গ্রেপ্তার চেয়ে আবেদন করতে পারেন কি না বা আদালত এমন রায় দিতে পারেন কি না মতিন খসরুর কাছে এ বিষয়ে জানতে চান শেখ হাসিনা।



তখন খসরু না বাচক উত্তর দিলে তিনি পুরো রায় পড়েছেন কি না জিজ্ঞেস করেন প্রধানমন্ত্রী। তখনও খসরু না বললে তার প্রতি রাগান্বিত হন শেখ হাসিনা।



এসময় দলের কয়েকজন নেতা বলেন, আদালত ইস্যুতে অ্যাটর্নি জেনারেল ও তার কার্যালয় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।

 

পরে শেখ হাসিনা দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন খসরু, আওয়ামী আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাহারা খাতুন ও মমতাজ উদ্দিন মেহেদীর কাছে বারের নির্বাচনে দল সমর্থিত প্যানেলের হারের ব্যাখ্যা চান।



এসময় মেহেদি নিজেকে জনপ্রিয় দাবি করে তাকে কেন মনোনয়ন দেয়া হয়নি তা জানতে চান।



উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তুমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, তোমার দায়িত্ব সারা দেশের, তোমাকে মনোনয়ন না দেয়ায় তুমি বিরোধিতা করেছ, দল সমর্থিত প্রার্থীদের হারিয়েছ।'



শেখ হাসিনা হুমকি দিয়ে বলেন, 'আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ এক হয়ে কাজ করতে না পারলে তাদের উভয়ের ওপর থেকে দলের সমর্থন তুলে নেয়া হবে।'

 

এছাড়া অন্যান্য ভূঁইফোর সংগঠনেরও সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। বলেন, 'দলের নাম নিয়ে তারা অবৈধ কাজ করছে, এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'



উল্লেখ্য, গত ১২ ও ১৩ মার্চ সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ মার্চ ফল প্রকাশিত হয়। এতে সভাপতি পদে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনে এবং সম্পাদক পদে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির বর্তমান সম্পাদক এম মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হন।



মূলত আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদসহ আরো কয়েকটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণেই আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের ভরাডুবি হয়।



এছাড়া, স্বাধীনতার পরে ঢাকা বারের নির্বাচনে আওয়ামীপন্থিদের সাদা প্যানেলের অভূতপূর্ব লজ্জাজনক পরাজয় হয়েছে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০১৪-১৫ বর্ষের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থিদের নীল প্যানেল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ১৯টি পদে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়। নির্বাচনে ভরাডুবি হয় আওয়ামীপন্থি সাদা প্যানেলের। কেবল ছয়টি সদস্য পদ নিয়েই তাদেরকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে এবার।



বৈঠক সূত্র জানায়, স্বাগত বক্তব্যের পর নারায়ণগঞ্জের খুনের প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা রুদ্ধদার বৈঠকে বলেন, ‘আমি মায়ার জামাইকেও ছাড় দেই নাই। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ পার পাবে না। আর যে খুন করেছে সে আমাদের দলের নয়। এখন থেকে কাউকে দলে নেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।'

 

বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে জেলা সম্মেলনের বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়। আগামী দু’একদিনের মধ্যেই তিনি যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়ে বৈঠক করবেন বলেও জানান তিনি।



বৈঠকের এক পর্যায়ে তিতাস ও পেট্রোবাংলায় লুটপাট চলছে বলে অভিযোগ করে সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, 'এসব লুটপাটে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর জড়িত। তার এ অভিযোগ সমর্থন করেন দলের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এ বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'



বৈঠকে ভারতের নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারে এমন আলোচনা উঠলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরাতো ক্ষমতায়ই আছি, বিজেপি আসলে কী আর না আসলে কী!’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!