দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ এক্সক্লুসিভঃ অবশেষে জনমতের প্রবল চাপে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় অবসরে পাঠানো র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা লে: কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ এবং মেজর আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপর অভিযুক্ত সাবেক নৌ অফিসার লেঃ কমান্ডার রানার কোন হদিস পাওয়া না যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
শুক্রবার গভীর রাতে মিলিটারি পুলিশের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ তাদের ঢাকা সেনানিবাসের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার ভোর ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের প্রধান খন্দকার মুহিদ উদ্দীন দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে জানান, দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে চাকরিচ্যুত নৌবাহিনী কর্মকর্তা লে. কমান্ডার এমএম রানাকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের ক্যান্টনমেন্ট থানায় রাখা হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ হওয়া মাত্রই তাদের নিয়ে পুলিশের একটি দল নারায়ণগঞ্জ রওয়ানা দেবে।
এর আগে গত রোববার র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এমনকি দণ্ডবিধি বা বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে বলেন আদালত।
ওইদিন রাতেই তিন র্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের অনুলিপি পুলিশ সদর দপ্তরে পৌঁছে। এরপর আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠির জবাব দিয়েই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীর সাবেক তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারে কোনো বাধা নেই।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল সাতজনকে অপহরণের পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ এবং দুই কমান্ডার নৌবাহিনীর মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে ২৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
গত ৩০ এপ্রিল লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদকে অকালীন (পূর্ণ সুবিধাসহ) এবং মেজর আরিফ ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়।
এর আগে মামলার প্রধান আসামি গডফাদার নূর হোসেনের দেয়া ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র্যাব-১১ এর সিওসহ অন্যরা ৭ জনকে হত্যা করেছে এমন অভিযোগ করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নিহত নজরুল ইসলামের পরিবার।
নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও তার বাবা (নজরুলের শ্বশুর) শহীদুল ইসলাম জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে র্যাবের বিরুদ্ধে পরে লিখিত অভিযোগ দেন।