বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তির বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি- বিজেপি। ভারতের ইংরেজি দৈনিক ডেকান হেরাল্ড এ খবর জানিয়েছে।অবশ্য বাংলাদেশের বিতর্কিত সরকারের বদলে আগাম নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার আসলে তাদের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলোর সমাধা করা হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞগন আশা করছেন।
বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয়ী হওয়ায় ভারতের হবু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে রোববার ফোন করে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর কিছুক্ষণ পর বিজেপি বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি ও সীমান্ত চুক্তির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে। অবশ্য বাংলাদেশের প্রধান প্রত্যাশাগুলো পূরণে মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের নতুন সরকার খুব একটা সাহায্য করবে না বলে আগে থেকেই সংশ্লিষ্টরা ধারণা করে রেখেছেন।এর কিছুক্ষন পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ভারতের হবু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানান এবং জনাব মোদী বাংলাদেশের জনগনের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কথা জানান।
ডেকান হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার এ চুক্তিগুলো ভারতের পার্লামেন্টে অনুমোদন করতে না পারায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার (ইউপিএ) প্রতি কিছুটা নাখোশই ছিল। বিজেপি ও আঞ্চলিক আসাম গণপরিষদের তীব্র বিরোধিতার কারণে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার চুক্তিগুলো পার্লামেন্টে অনুমোদন করতে পারছিল না।
বিজেপির আসাম শাখার সভাপতি সর্বানন্দ সোনোয়াল ডেকান হেরাল্ডকে বলেন, ‘বিজেপি সরকার আসামের ভূমি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করার চুক্তি অনুমোদন করবে না, এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। আমরা অতীতেও এর বিরোধিতা করেছি, ভবিষ্যতেও এর বিরোধিতা করব।’
আসামে বিজেপির পক্ষ থেকে লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী সোনোয়াল আরও বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি আসাম তথা সমগ্র ভারতের জন্য ক্ষতিকর, এ ধারণায় অটল বিজেপি। এ ব্যাপারে দ্বিতীয়বার ভাবার সুযোগ নেই।’
এদিকে এবারের নির্বাচনে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভায় ৩৪টি আসন পাওয়ায় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির ব্যাপারে ফের সমঝোতা শুরু করা মোদি সরকারের জন্য কঠিন হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে ২০১১ সাল থেকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ঝুলে রয়েছে।
এছাড়া ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের তীব্র বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। এই বিরোধিতা করার জন্যই আসামে বিজেপির সমর্থন বেড়েছে বলে ডেকান হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে আসামে ১৪টি আসনের মধ্যে সাতটি আসন পেয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র তিনটি আসন। অথচ ২০০৯ সালের নির্বাচনে সাতটি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস।