DMCA.com Protection Status
title=""

ফেনীতে আরও লাশ পড়বেঃ জয়নাল হাজারী

joynal hajariফেনীর এক সময়কার তুমুল আলোচিত-সমালোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জয়নাল হাজারী বলেছেন, শিগগিরই ফেনীতে আরও লাশ পড়বে। এই তালিকায় তিনি নিজেও রয়েছেন। এছাড়াও আছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম এলাকার এক বিচারক, ফেনী জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ও ধর্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরজু।

বৃহস্পতিবার দৈনিক যুগান্তরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলছিলেন একদার বহু বিতর্কিত ফেনীর সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীন হাজারী।

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্যের ভিত্তিতে তার কাছে মনে হয়েছে উল্লিখিত ব্যক্তিরা এখন নিরাপদ নন। যে কোনো সময় তিনিসহ তারা সবাই খুন হতে পারেন। আর এই সিরিয়াল খুনের নাটেরগুরু ও নেপথ্যে আছেন ফেনীর বর্তমান এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী।

বিষয়টি ইতিমধ্যে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপিকেও জানিয়েছেন বলে জানান। কিন্তু তার ধারণা, ফেনী জেলার বর্তমান পুলিশ প্রশাসন স্থানীয় এমপি নিজামের পোষা চাকর। এদের দিয়ে কোনোভাবে এসব সিরিয়াল কিলিং নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তার মতে, ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হককেও প্রকাশ্যে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন নিজাম হাজারী।

কিলিং মিশনের পুরো বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছে নিজাম হাজারীর ক্যাডার ও তার মামাতো ভাই আবীর। একরামুল হককে প্রথম গুলি চালিয়েছে তার মামাতো ভাই। জয়নাল হাজারী এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে অবিলম্বে নিজাম হাজারীকে গ্রেফতার করে প্রয়োজনে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানান। তার মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় যে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছেন, ফেনীর ঘটনায় এ ধরনের ভূমিকা না রাখলে ফেনী জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাবে।

‘জয়নাল হাজারীকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একরামুল হকের খুনের রহস্য বেরিয়ে আসবে’- এমপি নিজাম হাজারীর সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জয়নাল হাজারী বলেন, এটা রাজনৈতিক অপকৌশল। হত্যাকাণ্ডের রহস্য ধামাচাপা দেয়া এবং জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরিয়ে দেয়ার কৌশল। তিনি বলেন, রিমান্ডে নেয়ার দরকার হবে না। এমনিতেই সব তথ্য ফাঁস করে দেব।

কিলিং মিশনের ভিডিও ফুটেজ থেকেই সব রহস্য বেরিয়ে আসবে কারা একরামুলকে হত্যা করেছে। আর খুনের পর কারা গানপাউডার দিয়ে একরামুলের নিথর দেহ জ্বালিয়ে ছাই করে দিয়েছে, তা-ও জানা যাবে। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে দেশে কেউ না কেউ এই হত্যাকাণ্ডের ছবি ধারণ করে রেখেছেন। যে কোনো সময় এই ফুটেজও বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন, একরাম হত্যাকাণ্ডের মধ্যে যে নির্মমতা আর নৃশংসতা ছিল তাতেই প্রমাণ করে কারা তাকে খুন করেছে।

কারা তার প্রতিপক্ষ। তার মতে, ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হকই ছিলেন নিজাম হাজারীর একমাত্র পথের কাঁটা। তাই নির্মমভাবে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। একরাম খুনের রহস্য কি জানতে চাইলে জয়নাল হাজারী বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে দেয়া হলফনামায় নিজাম হাজারীর দেয়া মিথ্যা তথ্য এবং দুই বছর ১০ মাস সাজা কম খেটে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য জেনে গিয়েছিল তারই প্রতিপক্ষ উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক।

আর এ কারণেই পথের কাঁটা সরিয়ে দেয়া হয়েছে। জয়নাল হাজারী বলেন, নিজাম হাজারী ছিলেন এক সময়ের চট্টগ্রাম এলাকার ছাত্রশিবিরের দুর্ধর্ষ ক্যাডার নাসির ও সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠ সহচর। নিজামের ধারণা ছিল এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য নিয়ে একমাত্র একরামুলই আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। তাছাড়া টেন্ডারবাজি, ক্ষমতার আধিপত্য, চাঁদার টাকার ভাগ-বাটোয়ারা এসব নিয়েই মূলত একরামুলকে খুন করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

তবে জয়নাল হাজারী দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, স্থানীয় প্রশাসনকে (এসপি থেকে থানার এসআই) সরিয়ে দিয়ে যদি নিরপেক্ষ তদন্ত করা হয় তা হলে কোনোভাবেই খুনিরা পার পাবে না। কারণ কোনো না কোনো আলামত রেখে গেছে খুনিরা। খুনের সঙ্গে যাদের নাম ইতিমধ্যে বিভিন্নভাবে প্রকাশ্যে এসেছে তারা সবাই নিজাম হাজারীর ক্যাডার। এটা ফেনীর জনগণ কেন আকাশ-বাতাস পর্যন্ত জানে। তিনি বলেন, যদি নিজাম হাজারী এ খুনের সঙ্গে জড়িত না থাকত তা হলে এতদিনে সব খুনিকে গ্রেফতার করা যেত।

কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন সবকিছু জেনেশুনেও রহস্যজনক কারণে কিলিং মিশনের সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করছে না। জয়নাল হাজারী আরও বলেন, একরাম হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার না হলে এবং খুনিদের গ্রেফতার করতে না পারলে আরও লাশ পড়বে ফেনীতে। ইতিমধ্যে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে তার কাছে এসেছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি সাখাওয়াতকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে গিয়েছিলেন। তাকে সব কথা খুলে বলেছেন। কারা কারা খুনের তালিকায় আছেন সেই তথ্যও দেয়া হয়েছে প্রতিমন্ত্রীর কাছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় পুলিশ সুপারকে টেলিফোন করে এসব বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছেন।

কিন্তু স্থানীয় এসপি কোনো ব্যবস্থা নেননি। জয়নাল হাজারী বলেন, এরপর তিনি সাখাওয়াতকে নিয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি শহিদুল হকের কাছেও গিয়েছিলেন নিজের নিরাপত্তাসহ সাখাওয়াত ও অন্যদের নিরাপত্তার জন্য। এ আইজিপিও স্থানীয় এসপিকে টেলিফোন করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছেন। কিন্তু এসপিসহ থানা পুলিশের এসআই, কনস্টেবল পর্যন্ত স্থানীয় এমপি নিজাম হাজারীর চাকরের মতো চলে। এদের হাতে তাদের জীবন কোনোভাবেই নিরাপদ নয় বলেও তিনি মনে করেন। জয়নাল হাজারী বলেন, চট্টগ্রাম এলাকার এক বিচারকও নিজাম হাজারীর কিলিং জোনে আছেন। এছাড়া আছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। গত নির্বাচনেও তাকে নানাভাবে হেনস্তা করেছে নিজাম হাজারীর বাহিনী।

এছাড়া ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরজুও রয়েছেন নিজাম হাজারীর রেড লিস্টে। এই আরজুকে নিজাম হাজারী নানাভাবে চেষ্টা করেছিল তার বাহিনীতে নিতে। কিন্তু আরজু রাজি হননি। তাই তার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সাক্ষাৎকারে জয়নাল হাজারী বলেন, ২০০১ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি বলতে গেলে আত্মগোপনে রয়েছেন। নেত্রীর নির্দেশে ৫-৬ বছর দেশের বাইরে গিয়েও অবস্থান নিয়েছিলেন। সে সময় একরামুল কিছুদিন তার সঙ্গে আত্মগোপনে ছিলেন। তার ভাষায় নিহত একরামুল হক তার হাতে তৈরি করা নেতা। তিনি সন্তানের মতো তাকে লালন-পালন করেছেন।

এর আগেও নিজাম বাহিনী একরামুলকে দু’বার খুন করতে চেয়েছিল। গত জাতীয় নির্বাচনের দিন তাকে লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যগুণে সেদিন বেঁচে যায়। জয়নাল হাজারী বলেন, স্থানীয় রাজনীতির কোনো পদেও তিনি এখন নেই। রাজনীতি করার সেই শক্তিও তার এখন নেই। তার এখন একমাত্র কাজ সাংবাদিকতা। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি তার দৈনিক হাজারিকা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আর সকালে ২-৩ ঘণ্টা কাটান সোনারগাঁও হোটেলের জিমনেশিয়ামে। ফেনীর বিতর্কিত হাজারী বাহিনী ও তার স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা এখন কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এদের অনেকে এখন বিশ্বাসঘাতক-বেইমান হয়ে গেছে। যারা তার অর্থবিত্ত আর টাকায় সংসার চালিয়েছে, বাড়ি-গাড়ি বানিয়েছে- তাদের কেউ কেউ এখন নিজাম হাজারীর বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। তবে বেইমান হলেও স্টিয়ারিং কমিটির কোনো কোনো সদস্যের প্রশংসা করেন জয়নাল হাজারী।

ছোট বাবু নামে এরকম একজন সদস্যের নাম উল্লেখ করে জয়নাল হাজারী বলেন, ছোট বাবু গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার নমিনেশন পেপারে প্রস্তাবক হিসেবে স্বাক্ষর করে। কিন্তু তাকেও নিজাম হাজারী তার বাহিনীতে নিয়ে নেয়। যার কারণে সে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে বলে, ওই স্বাক্ষর তার ছিল না। জয়নাল হাজারী বলেন, এই ছোট বাবুই কিছুদিন আগে তার জীবন বাঁচিয়েছে। নিজাম হাজারীর ক্যাডার বাহিনী পরিকল্পনা করেছিল জয়নাল হাজারী ফেনীতে এলে খুন করা হবে। ওই পরিকল্পনায় ছোট বাবুও ছিল। জয়নাল হাজারী বলেন, যেহেতু ১০-১২ বছর তার নুন খেয়েছিল তাই ছোট বাবু তাকে এই হত্যা পরিকল্পনার কথা টেলিফোনে জানিয়ে তার জীবন রক্ষা করে। জয়নাল হাজারী আরও বলেন, এই ‘অকৃতজ্ঞ’ নিজাম হাজারীকেও তিনি মাটি থেকে তুলে এনেছেন।

নিজাম তখন চট্টগ্রামে রাজনীতি করত। শিবির ক্যাডার নাসির ও সাজ্জাদের সঙ্গে অস্ত্রবাজি করত। সেখান থেকে এনে তার গাড়ির ড্রাইভার করেন। এক পর্যায়ে প্রমোশন দিয়ে বডিগার্ড। কিন্তু সেই নিজাম হাজারীও তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ফেনীর জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এখন গোটা ফেনী নিয়ন্ত্রণ করছে। ফেনীতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ টুঁ শব্দ করতে পারছে না।

জয়নাল হাজারীর আমলের চেয়ে এখন জনগণ বেশি আতংকিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, জয়নাল হাজারী কারও ক্ষতি করেনি। হাজারী বাহিনী চাঁদাবাজি করেনি। তাদের কেউ এখন এলাকায়ও নেই। সবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে দেশছাড়া করা হয়েছে। কাউকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। কারও হাতে মিথ্যা অস্ত্র তুলে দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, জয়নাল হাজারীর বাহিনী মানুষ খুন করেনি। তবে যারা ফেনীর জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছে হাজারীর রাজনৈতিক বাহিনী তাদের শায়েস্তা করেছে।

আর এখন নিজাম হাজারীর কাছে ফেনীর আকাশ-বাতাস পর্যন্ত জিম্মি। তার মতে একরাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজাম হাজারী জড়িত নয়- এমন কথা একটা শিশুও বিশ্বাস করবে না। তার মতে মূলত নিজের প্রভাব বলয় আরও শক্তিশালী করা, ধন-দৌলত, টাকার পাহাড় বানানোর জন্য নিজাম হাজারী একরামকে হত্যা করেছে। একরাম হত্যায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত বলে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তাকে ‘আইওয়াশ’ বলে অভিহিত করে জয়নাল হাজারী বলেন, একরাম যে এলাকায় নিহত হয়েছে সেখানে বিএনপি-জামায়াতের কোনো পোকাও নেই। মানুষ তো দূরের কথা। তাছাড়া বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে এভাবে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করে মৃত্যু নিশ্চিতের পর গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার মতো শক্তি নেই।

মূলত জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর জন্য এ ধরনের মামলা সাজানো হয়েছে। এর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনেরও হাত আছে। একরামুল খুন হওয়ার আগে ১৯ মে জয়নাল হাজারী সম্পাদিত দৈনিক হাজারিকা পত্রিকায় ‘নিজাম এখন উভয় সংকটে প্রতিপক্ষকে খুন ও গুমের পরিকল্পনা হচ্ছে’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে কোনো সময় উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুলসহ অনেকে খুন ও গুম হতে পারে।

কারণ একরামসহ কিছু লোক নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে তথ্য দিয়েছে। ওই খবরের সত্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে জানতে জয়নাল হাজারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তিনি পেয়েছিলেন। এটা যে কোনো সাংবাদিকের জন্য ক্রেডিট। ওই ঘটনার তথ্য দিয়ে এলাকা থেকে বহু লোক তাকে টেলিফোন করেছিল। তিনি বলেন, একরামুল হকের সঙ্গে নিজামের অন্তত একশ’র বেশি বিষয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। এর মধ্যে অন্যতম হল, গত নির্বাচনে নিজাম হাজারীকে সমর্থন দেয়নি একরাম। দলের সাধারণ সম্পাদক যদি দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন না দেয় তা হলে পরিস্থিতি কি হতে পারে সেটা চিন্তা করে দলীয় হাইকমান্ডের কাছে নানা তদবির করে একরামুলকে শেষ পর্যন্ত নিজ পক্ষে ভিড়িয়েছিল নিজাম।

কিন্তু সে মানসিকভাবে নিজাম হাজারীকে সমর্থন দেয়নি। তা ছাড়া কিছুদিন আগে আলমগীর নামে একরামুলের এক কর্মীকে নিজাম হাজারীর এক ক্যাডার মারধর করে। ওই ঘটনায় জাহিদ নামের ওই ক্যাডারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছিল একরাম। কিন্তু নিজাম হাজারী তার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জাহিদকে মামলা থেকে অব্যাহতি করিয়ে নিয়ে আসে। কিছুদিন আগে আবার জাহিদকে দল থেকে বহিষ্কার করে। কিন্তু এমপি নিজাম তাকে আবারও দলভুক্ত করে। নিজাম হাজারীর বাহিনীর সদস্যরা সোনার দোকান লুট করেছিল। এই ঘটনায় থানায় মামলা করায় বাদীকে এক কোটি টাকা ‘জরিমানা’ করা হয়েছিল।

ওই ঘটনায় একরাম প্রতিবাদ করেছিল। জয়নাল হাজারী বলেন, নিজাম হাজারী খুনি, ডাকাত। তার অনেক অস্ত্র শিবির ক্যাডারদের কাছে রক্ষিত আছে। এখনও কোনো কোনো শিবির ক্যাডারকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হলে তারা স্বীকার করছে এই অস্ত্র নিজাম হাজারীর। জয়নাল হাজারী অভিযোগ করে বলেন, ফেনীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত নেত্রীর নির্দেশ পালন করেনি পুলিশ প্রশাসন।

তিনি বলেন, স্থানীয় এমপির কাছে পুলিশ প্রশাসন এতটাই জিম্মি তাদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পর্যন্ত পালন সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনি বলেন, এটা করতে না পারলে ফেনী থেকে আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে যাবে। তিনি বলেন, কিভাবে এই হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করতে হয় সেটা তিনি জানেন। সঠিক তদন্ত হোক তা হলে সব তথ্য দেবেন। রিমান্ডে নেয়ার দরকার হবে না। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!