DMCA.com Protection Status
title="৭

হলমার্ক কেলেঙ্কারিঃ দায়মুক্তি পাচ্ছেন সোনালীর ১০ পরিচালক

image_92389_0হলমার্কের ঋণ জালিয়াতির কেলেঙ্কারি থেকে পার পেয়ে যাচ্ছেন সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের ১০ সদস্যের সবাই। পরিচালকদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত কোনো সম্পদের তথ্য না পাওয়ায় দুদক তাদেরকে দায়মুক্তি দিচ্ছে বলে জানা গেছে।



এছাড়া স্বীকৃত বিলের (ননফান্ডে) ১৭০০ কোটি টাকার অনুসন্ধান নিয়েও দোলাচলে রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।



দুদকের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র সোনালী ব্যাংকের সব পরিচালককে দায়মুক্তি দেয়ার বিষয়টি দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে  নিশ্চিত করেছেন। সেই সঙ্গে ননফান্ডের জালিয়াতির অংশটি অনুসন্ধান থেকে বাদ দেয়ায় দুদকের ভিতরে এবং বাইরে ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।



দুদক সূত্র জানায়, কমিশনের এক সদস্য এ নিয়ে কমিশন বৈঠকে গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে, সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে পরিশোধ করতে শুরু করেছে অন্য ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া ঋণগুলো। ওইসব ঋণের টাকাই মূলত হলমার্ককে দেয়া হয়েছে।



পরিচালকদের বাদ দেয়ার বিষয়ে দুদকের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে কোনো অবৈধ সম্পদ পায়নি দুদক। এ কারণে তাদেরকে দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে।’



দুদকের এ প্রধান নির্বাহী জানান, এই ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদের কেউ জড়িত না। কারণ এ ঋণ নেয়ার সময় তাদের পরিচালকরা কিছুই জানতেন না। বোর্ডের অনুমতি ছাড়াই এই কাণ্ড ঘটেছে।



তিনি আরো বলেন, ‘যদি ঋণ দেয়ার সময় বোর্ডের অনুমতি নেয়া হতো তাহলে আমরা তাদেরকে ধরতে পারতাম। এরপরও আমরা তাদের সম্পদ অনুসন্ধান করে দেখেছি। তাদের কোনো অবৈধ সম্পদের খোঁজ দুদক পায়নি।’



দুদকের তালিকা থেকে যাদেরকে দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে তারা হলেন- সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী বাহারুল ইসলাম, সুভাষ সিংহ রায়, মো. আনোয়ার শহিদ, এএসএম নাইম, কেএম জামান রোমেল, কাশেম হুমায়ন, সদস্য সত্যেন্দ্র চন্দ্র, জান্নাত আরা হেনরি, শহীদ উল্লাহ মিয়া ও সাইমুম সরোয়ার কমল।



জালিয়াতির মাধ্যমে হলমার্কের ছয়টি প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নেয় প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে হলমার্ক একাই ২ হাজার ৬০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।



উল্লেখ্য, হলমার্কের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিটের ২৪ আসামি হলেন- হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ, গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তানভীরের স্ত্রী জেসমিন ইসলাম, প্রতিষ্ঠানের জিএম তুষার আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখার ডিজিএম ও ব্যবস্থাপক (সাময়িক বরখাস্ত) একেএম আজিজুর রহমান, জিএম (বর্তমানে ওএসডি) ননী গোপাল নাথ, জিএম (বর্তমানে ওএসডি) মীর মহিদুর রহমান, এজিএম (সাময়িক বরখাস্ত) মো. সাইফুল হাসান, এক্সিকিউটিভ অফিসার (সাময়িক বরখাস্ত) মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, এসইও (ধানমণ্ডি শাখা) মেহেরুনন্নেসা মেরী, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র অফিসার মো. ওয়াহিদুজ্জামান, ডিএমডি (বর্তমানে ওএসডি) মো. মাইনুল হক, ডিএমডি (বর্তমানে ওএসডি) মো. আতিকুর রহমান, ডিজিএম (বর্তমানে ওএসডি) শেখ আলতাফ হোসেন, ডিজিএম (সাময়িক বরখাস্ত) মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, এজিএম (সাময়িক বরখাস্ত) মো. কামরুল হোসেন খান, এজিএম (সাময়িক বরখাস্ত) আশরাফ আলী পাটোয়ারী, এজিএম মো. আবুল হাসান, আনোয়ারা স্পিনিং মিলসের স্বত্বাধিকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের স্বত্বাধিকারী মীর জাকারিয়া, সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. জিয়াউর রহমান এবং অ্যাপারেল ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।



দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বিশেষ টিম হলমার্কের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১১টি মামলার অভিযোগ তদন্ত করেছেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!