দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তাদের বাংলাদেশ নীতি অটুট রেখে পরিবর্তন আনতে পারে কূটনীতির কৌশল ও ধরণে। এই পরিবর্তনের বড় ঈঙ্গিত হচ্ছে নতুন করে দায়িত্ব নিতে যাওয়া রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নকেট। ড্যান মোজিনার কূটনৈতিক কৌশলের সাথে নতুন দায়িত্ব পাওয়া মার্সিয়া বার্নকেটের কতগুলো গুণগত পার্থক্য আছে। কেবল মোজিনা নয়, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের এম্বাসেডরের ভূমিকা পালনকারী অন্যান্য কূটনীতিকের বিপরীতেও বার্নকেটের রয়েছে কৌশলগত স্বাতন্ত্র্য।
দশম সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানের পরস্পর বিরোধী অবস্থানের প্রেক্ষিতেও বার্নকেট নতুন গতিপথ তৈরী করতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বার্নকেট ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের বেসামরিক তেজষ্ক্রিয় উপাদান বিনিময়ের একটি চুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এরপরই তেজষ্ক্রিয় শক্তি বিষয়ে ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতি ঘটে। এবং ভারত বেসামরিক তেজস্ক্রিয় শক্তি উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, ইন্ডিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নে এই সফলতার অভিজ্ঞতা, বার্নকেট বাংলাদেশের এম্বাসেডরের দায়িত্ব পালনের সময়ও কাজে লাগাবেন।
এম্বাসেডর হিসেবে মার্সিয়া বার্নকেটের সফলতা যেমন আছে তেমনি আছে ব্যর্থতাও। এছাড়া, বার্নকেটের নামের সাথে জড়িয়ে আছে নানান বিতর্কও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দারিদ্র নিরসনে মুরগী পালন থেকে শুরু করে পারমাণবিক অস্ত্র পরিহারে চুক্তি স্বাক্ষরের মতো বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন ইস্যুতে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন বার্নকেট। সেনেগালে এমবাসেডরের দায়িত্ব পালন করার সময় বিতর্কিত হয়ে পড়ায় বার্নকেটকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল।
অন্যান্য এম্বাসেডর যেখানে গোপনে কার্যক্রম পরিচালনা করেন, বার্নকেট সেখানে অনেক বেশি উন্মুক্ত। তিনি সেনেগালের টেলিভিশন চ্যানেলে দুর্নীতি বিষয়ে সেদেশের প্রেসিডেন্টের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। এছাড়া, বার্নকেট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সেনেগালের রাজনীতিবিদদের দুর্নীতির বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। এইভাবে, প্রকাশ্যে দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সেনেগালের ক্ষমতাসীনদের ব্যাপক বিরোধের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে এই সাহসী কূটনীতিক কি অবদান রাখতে সক্ষম হন, তা দেখতে আমরা কৌতুহলী দৃষ্টি মেলে রইলাম।