ভারতের অখণ্ডতা রক্ষার অঙ্গীকার করে ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিজেপির নরেন্দ্র মোদি। সোমবার স্থানীয় সময় ৬টা ১২ মিনিটে দেশটির রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর কাছ থেকে শপথ বাক্য পাঠ করেন তিনি। এর মাধ্যমেই শুরু হলো ভারতের নতুন মোদি সরকারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা।
ভারতের রাইসিনা হিলে রাষ্ট্রপতি ভবনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে (ফোরকোর্ট) শপথ অনুষ্ঠান হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাসহ এত বড় আয়োজন এবারই প্রথম।আনুমানিক প্রায় ৪৫০০ জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্হিত ছিলেন এই বর্নাঢ্য আয়োজনে।
মোদির শপথগ্রহণের পরপরই একে একে শপথ নেন আরো ৪৪ মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে ৪৫ সদস্যের মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ২৪ জন। বাকি ২১ জন শপথ নিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে।
প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৫ পূর্ণ মন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদি (প্রধানমন্ত্রী), রাজনাথ সিং, অরুন জেঠলি, সুষমা স্বরাজ, নীতিন গাডকারি, ভেঙ্কাইয়া নাইডু, সদানন্দ গৌড়া, রামবিলাস পাসোয়ান, গোপিনাথ মুন্ডে, কালরাজ মিশ্র, মানেকা গান্ধী, অনন্ত কুমার, রবিশঙ্কর প্রসাদ, অশোক গাদপাতি রাজু, অনন্ত গেতে, হরশিমরত কাউর, নরেন্দ্র সিং টোমার, জুয়েল ওরান, টি গেহলট, স্মৃতি ইরানি, উমা ভারতী, নাজমা হেপতুল্লা, রাধা মোহন সিং ও হর্ষবর্ধন।
২১ প্রতিমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতি প্রণব মূখার্জির কাছ থেকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন- জেনারেল ভি কে সিং, সন্তোষ গ্যাংওয়ার, শ্রীপদ নায়েক, ধর্মেন্দ্র প্রধান, সর্বানন্দ সোনোওয়াল, প্রকাশ জাভেরেকর, পিষুষ গোয়েল, জীতেন্দ্র সিং, নির্মলা সীতারমন, রাও ইন্দ্রজিৎ, জিএম সিদ্ধেশ্বরা, মনোজ সিনহা, উপেন্দ্র খুশওয়া, রাধাকৃষ্ণ পি, কিরেন রিজু, কৃষ্ণনান পাল গুজর, সঞ্জীব কুমার, বালান মানসুকভাই, রাও সাহাব ধানউই, বিষ্ণুদেব ও সুদর্শন ভাগবত।
ইতিমধ্যে ১০ মন্ত্রীর দপ্তর নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম। তাদের মধ্যে রয়েছেন রাজনাথ সিং (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), সুষমা স্বরাজ (পররাষ্ট্রমন্ত্রী), অরুন জেটলি (অর্থমন্ত্রী), ভেঙ্কাইয়া নাইডু (কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী), সদানন্দ গৌড়া (রেলমন্ত্রী), নীতিন গাডকারি (টেলিযোগাযোগমন্ত্রী), রবিশঙ্কর প্রসাদ (তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী), অরুন শৌরি (প্লানিং কমিশনের চেয়ারম্যান), হর্ষবর্ধন (স্বাস্থ্যমন্ত্রী), স্মৃতি ইরানি (এইচআরডি)।
ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৭ মিনিটে শেষ হয় শপথ অনুষ্ঠান। শপথ শেষ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি প্রণব মূখার্জী এবং উপ রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির সঙ্গে একই মঞ্চে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে ফটোশেনে অংশ নেন মোদিসহ ৪৫ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। এরপর পরই নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানাতে শপথ অনুষ্ঠানের মঞ্চে আসেন আমন্ত্রিত সার্কভুক্ত রাষ্ট্রপ্রধানরা। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরীফ, শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের পরই বাংলাদেশের পক্ষে নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানাতে যান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন।
ভারতের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংসহ কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন নরেন্দ্র মোদি। স্থানীয় সময় ৭টা ২২ মিনিটে শপথ গ্রহণের স্থান ত্যাগ করেন। এরপর আমন্ত্রিত অথিতিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিজেপির নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনের উন্মুক্ত স্থানে এর আগে মাত্র দু’বার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। ১৯৯০ সালে চন্দ্রশেখর এবং ১৯৯৮ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ি উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে শপথ নেন। ওই দু’বার নিমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২০০ এবং ১ হাজার ৩০০।