DMCA.com Protection Status
title="৭

ওই মিয়া, কেমুন মেজর হইলেন, মারতে এতক্ষণ লাগে?- নূর হোসেন

nur_hossain_2নারায়ণগঞ্জে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনের অপহরণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন ঘটনার সময় সদ্য সাবেক মেজর আরিফ হোসেনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতেন।

একে একে সাতজনকে হত্যার সময় নূর হোসেন মোবাইল ফোনে মেজর আরিফকে তাগাদা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে মেজর আরিফকে ধমকের সুরে নূর হোসেন বলেন, 'ওই মিয়া, কেমুন মেজর হইলেন, মারতে এতক্ষণ লাগে?'

মেজর আরিফ ও নূর হোসেনের মোবাইল ফোনের ওই কথোপকথন রেকর্ড এখন তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের হাতে।  কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনা সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে রিমান্ডে থাকা র‌্যাবের সাবেক ৩ কর্মকর্তার কাছ থেকে।

ঘটনার ভয়াবহতায় চমকে উঠছেন তদন্তের সঙ্গে যুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারাও। তদন্তসংশ্লিষ্টদের দাবি, তারা ৭ হত্যার রহস্য উন্মোচনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন। র‌্যাব-১১-এর সাবেক ৩ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, কাঁচপুর ব্রিজের নিচে অবৈধভাবে গড়ে তোলা নূর হোসেনের বালু ও পাথরের ব্যবসা কেন্দ্রে সাতজনকে হত্যা করা হয়।

এখান থেকে লাশ ট্রলারে করে নিয়ে ফেলা হয় বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের শান্তিনগর এলাকায়। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট এক সূত্র এসব তথ্য জানায়।  রিমান্ডে র‌্যাবের সাবেক ২ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহরণের পর গাড়িতে তুলেই সঙ্গে সঙ্গে ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করা হয় সাতজনকে। ঘটনা আড়াল করতে অপহরণের পরই তাদের নিয়ে যাওয়া হয় নরসিংদীতে।

সেখান থেকে রাতে ফিরিয়ে আনা হয় কাঁচপুর ব্রিজের নিচে। এখানে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল ইট, দড়ি, বস্তাসহ লাশ পরিবহনের যাবতীয় আয়োজন। অপহরণের পর থেকে লাশ ফেলা পর্যন্ত পুরোটা সময় মোবাইল ফোনে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে পাঠানো র‌্যাব-১১-এর সাবেক কর্মকর্তা মেজর আরিফের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল নূর হোসেনের।

বিশেষ সূত্র মারফত জানা যায়, মেজর আরিফের সঙ্গে নূর হোসেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মেজর আরিফকে ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন নূর হোসেন। কুমিল্লায় আরিফের ভগ্নিপতির ধানের ব্যবসায় টাকাও দিয়েছেন নূর হোসেন।

মেজর আরিফ ছাড়াও ঘটনার সঙ্গে র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ ও র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এমএম রানার সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। র‌্যাবের অন্য যেসব সদস্য এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরও শনাক্ত করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। সংগ্রহ করা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ। সব তথ্যপ্রমাণ হাতে পাওয়ার পর দৃশ্যমান হবে পুলিশি তদন্ত।নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বরাবরই বলেছেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তাড়াহুড়া করে এত বড় ঘটনার তদন্ত করলে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তদন্ত কাজ চলছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!