নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় র্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য আদালতের নজরে এসেছে।
রোববার একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্বলিত একটি প্রতিবেদন হাইকোর্টের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মো. খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে উত্থাপন করেন আইনজীবী তামজিদা মিলা। তিনি প্রতিবেদনের অংশবিশেষ আদালতকে পড়ে শোনান। ওই প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘এগুলো কি আদালত অবমাননা হবে, এটা কোনো বিষয় নয়, আমি পরোয়া করি না’ উল্লেখ রয়েছে।
পরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে আইনজীবী তামজিদা মিলা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যদি আদালতের প্রতি সম্মান না দেখান, আদালত অবমাননাকে পরোয়া না করেন, তাহলে সাধারণ জনগণ আদালত অবমাননাকে অন্য চোখে দেখবে। তাই দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আদালতকে পড়ে শোনানো হয়েছে। এ সংবাদটি বিচারপতিরা পড়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের কারণে হাইকোর্টের ওপর মানুষের শেষ আস্থাটুকুও হারিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি একজন নাগরিক হয়ে বিষয়টি আদালতের নজরে এনেছি। আদালত বিষয়টি বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন বলেই আশা করছি।’
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার বিকেলে গণভবনে জাপান সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘র্যাবের তিন কর্মকর্তাকে আদালত গ্রেপ্তারের নির্দেশ কেন দিল, এটা আমার বোধগম্য নয়।’
এসময় ‘জজ সাহেবদের’ কাছে তথ্য-প্রমাণ চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কীভাবে র্যাবের তিনজনকে গ্রেপ্তারে অর্ডার দেয়। ওই জজ সাহেবের কাছে নিশ্চয়ই তথ্য আছে। দুই জাজের কাছে তথ্য থাকলে দিন। তদন্তে সহায়তা করুন।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘ওই বেঞ্চের জজ সাহেবরাই তদন্ত করবেন। তারাই বিচার করবেন।’
এ বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী, আমি কি ভয় পাই? এগুলো কি আদালত অবমাননা হবে, এটা কোনো বিষয় নয়, আমি পরোয়া করি না। আমার কথা কঠোর হয়ে যাচ্ছে? বাস্তব কথা কঠোরই হয়।’