বাংলাদেশে মায়ানমার সীমান্তে বিজিবি সদস্য হত্যার পর, এ নিয়ে অপপ্রচারের লিপ্ত হয়েছে মায়ানমার। মায়ানমারের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্রগুলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিজিবি সদস্য নয় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানকে হত্যা করেছে মায়ানমারের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী। এই অপপ্রচারণায় মিয়ানমার সরকারের ইন্ধন থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যমগুলোতে সে দেশের সরকার পুরো নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে।
নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানকে হত্যার পর মিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরএসও’র একজন সদস্যকে মিয়ানমারের পুলিশের সাথে গুলি বিনিময়ে নিহত হয়েছে। এছাড়া, আরএসও’র ওই সদস্যের অস্ত্রও জব্দ করেছে মিয়ানমারের পুলিশ।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের(বিজিবি) নিহত সদস্য নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করলেও বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতায় পরিস্থিতি বদলে যায়। মিয়ানমার সরকার নিহত মিজানুর রহমানকে বিজিবি সদস্য হিসেবে স্বীকার করতে বাধ্য হয়। তারপরও, মিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যমগুলো নিহত বিজিবি সদস্যকে রোহিঙ্গা সন্দেহে হত্যা করা হয়েছে এমন প্রচার চালিয়েই যাচ্ছে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের(বিজিবি) নিহত সদস্য নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানের লাশ গতকাল শনিবার বিকেলে ফেরত দিয়েছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের পর সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে লাশটি ফেরত দেওয়া হয়। তবে তাঁর সঙ্গে থাকা অস্ত্র ফেরত দেয়নি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা৷ উল্টো সীমান্তে তারা সেনাসমাবেশ করেছে৷
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ গতকাল বিকেলে পিলখানায় নিজের দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। মহাপরিচালক বলেন, লাশ হস্তান্তরের পর এখন সীমান্তে শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে। ৩ জুন দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠকে খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গুলি ফেরত দেওয়ার কথা আছে। এ ছাড়া, ১০ জুন মিয়ানমারে বিজিবি-বিজিপির মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
তবে সীমান্তের সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ হলেও এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিজিবির মহাপরিচালক নিজেও বলেছেন, মিয়ানমার ওপারে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এর আগে সীমান্তে গুলিবর্ষণ ও বিজিবি সদস্যের লাশ ফেরত না দেওয়ায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মিউ মিন্ট থানকে গতকাল সকালে ফের তলব করা হয়। গত বৃহস্পতিবারও মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছিল।